সারা বাংলা

৩০০ বছর পর দুপুরের খাবার

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা জেলখানা থেকে আদালতে হাজিরা দিতে আসা হাজতি বা কয়েদিরা এখন থেকে নিয়মিত দুপুরের খাবার পাচ্ছেন। এতদিন তারা আদালত হাজতখানায় সারা দিন অভুক্ত থেকে বিকেলে বা সন্ধ্যায় কারাগারে ফিরে যেতেন। বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক অনুধাবন করে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি বিষয়ক এক সভায় ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো প্রথা ভাঙলেন মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) কামাল হোসেন ও আদালত পুলিশের পরিদর্শক শাহজাহান সিরাজ জানান, সম্প্রতি জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান মাগুরা জেলা কারাগার পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি হাজতি ও কয়েদিদের সঙ্গে কথা বলেন। বন্দিরা তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন তার কাছে। পরবর্তীতে গত ২০ মে জজ আদালত সম্মেলনকক্ষে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুলিশ ম্যাজেস্ট্রেসি বিষয়ক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান হাজিরা দিতে আসা আসামিদের দুপুরের খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যেহেতু জেলখানায় তাদের জন্য খাবারের বরাদ্দ থাকে সে কারণে তিনি জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষকে হাজিরা দিতে আসা আসামিদের খাবার পাঠনোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি কারাগার থেকে আদালত হাজতে খাবার আনা-নেওয়ার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করতে পুলিশ সুপারের প্রতি আহ্বান জানান। অবশেষে সবার সহযোগিতায় গত ২১ মে থেকে মাগুরা আদালতের হাজতখানায় দুপুরের খাবার পাচ্ছেন আসামিরা। পিপি কামাল হোসেন বলেন,  ব্রিটিশ আমল থেকে এখন পর্যন্ত জেলখানার হাজতি বা কয়েদিদের সকালে রুটি ও গুড় সরবরাহ করা হয়। দুপুরে ও রাতে দেওয়া হয় ভাত। কিন্তু যেসব আসামিকে সকালের নাস্তার পর মামলার হাজিরা দিতে আদালতে আনা হয় তাদের সারা দিন হাজতখানায় রাখার পর জেলখানায় ফেরত নিতে প্রায়ই সন্ধ্যা হয়ে যায়। আর জেলখানায় বিকেলেই আসামিদের রাতের খাবার দিয়ে লকআপে ঢোকানো হয়। সে কারণে আদালতে হাজিরা দেওয়া আসামিকে সারা দিন এক রকম অভুক্তই থাকতে হয়। তবে এখন থেকে নিয়মিত জেলখানা খেকে দুপুরের খাবার আসায় আদালতে হাজিরা দিতে আসা আসামিদের আর অভুক্ত থাকতে হচ্ছে না। রাইজিংবিডি/মাগুরা/২৮ মে ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/এসএন /শাহনেওয়াজ