সারা বাংলা

লংগদুতে হামলা : প্রতিবাদে মানববন্ধন

বান্দরবান প্রতিনিধি : রাঙামাটির লংগদু’র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও হামলার প্রতিবাদে বান্দরবান শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সম্মিলিত আদিবাসী ছাত্র সমাজ নামের একটি সংগঠন। রোববার সকালে বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে তারা মানববন্ধন করেন। এর আগে বান্দরবান শহরের পুরাতন রাজবাড়ীর মাঠ থেকে ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এই সময় মানববন্ধনে বান্দরবানের ১১টি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। জেলা মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সভাপতি অংথুই খই চাকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্রো স্টুডেন্ট ফোরামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অংস্রাং ম্রো, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের সহ-সভাপতি সুশীল ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের জেলা সভাপতি অনিক তঞ্চঙ্গ্যা, খুমি স্টুডেন্ট ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক রিউলং খুমি, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের মহানগর সভাপতি লুমংপ্রু প্রমুখ। চাকা স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের সভাপতি থোয়োইক্যজাই চাক বলেন, পাহাড়ে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। ঘটনায় আক্রান্ত  অসহায় জুম্ম পরিবারকে প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে বসতভিটায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদরের চার মাইল এলাকায় রাস্তার পাশের জঙ্গল থেকে লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে তার লাশ নিয়ে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে এই মিছিল থেকে লংগদুর তিনটিলা পাড়া, বাত্যাপাড়া,  উত্তর ও দক্ষিণ মানিকজুড় ও বড়াদম এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর গ্রামে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। আরো ৩ জন গ্রেপ্তার রাঙামাটির লংগদুতে হত্যার জেরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় লংগদু থানায় ৩০০ জনকে আসামি করে দায়েরকৃত মামলায় সকালে আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে লংগদু থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শাহ আলম, আব্দুর রহমান ও আব্দুল হালিম। এই পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাফিউল সারোয়ার। এই মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানান গেছে, লংগদু উপজেলায় পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সহিংস ঘটনার পর এখন এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অনেক পাহাড়ি লংগদুর তিনটিলা বৌদ্ধ বিহারে আশ্রয় নিয়েছে। লংগদু জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র বাহন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রেখেছে মোটরসাইকেল চালকরা। এলাকার বেশিরভাগ দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে। লংগদু মোটরসাইকেল মালিক কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি মো. হানিফ বলেন,  সমিতির পক্ষ থেকে কাউকে মোটরসাইকেল বন্ধ রাখতে বলা হয়নি। সবাই গ্রেপ্তার আতংকে এলাকার বাইরে চলে গেছে। সেইজন্য মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ আছে। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা। লংগদুতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রাইজিংবিডি/বান্দরবান/৪ জুন ২০১৭/এস বাসু দাশ/বকুল