সারা বাংলা

কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ রুটে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

মাদারীপুর প্রতিনিধি : ঈদের ছুটির শুরুতে শনিবার সকাল থেকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ রুটের কাঁঠালবাড়ি ঘাটের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। ছোট ছোট যানবাহনে যাত্রী উঠানোর প্রতিযোগিতায় স্থবির হয়ে পড়েছে লঞ্চ ও ফেরিঘাট এলাকা। ফলে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এরই সঙ্গে রয়েছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ। শনিবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে লঞ্চ, স্পিডবোট এবং ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিটি লঞ্চ ও স্পিডবোটে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। একই সঙ্গে সকল নৌযানসহ সব ধরনের পরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। দূরপাল্লার পরিবহনগুলোতেও বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। লোকাল ও দূরপাল্লার পরিবহনের ভেতরে জায়গা না থাকায় বাসের ছাদে যাত্রী উঠানো হচ্ছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে কাঁঠালবাড়ি ঘাট এলাকায় দীর্ঘ গাড়ির সারি দেখা গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজরদারি বাড়িয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একাধিক টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পদ্মা পার হতে স্পিডবোটে যাত্রী প্রতি ৫০-৮০ টাকা বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে। লঞ্চে ৩৩টাকা ভাড়ার স্থলে নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৫০টাকা। পরিবহনের দূরত্ব অনুযায়ী দুইশ’ থেকে তিনশ’ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ঘাটে নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলেও বাড়তি ভাড়া আদায়ের মনিটরিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে খেয়াল-খুশি মত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে সব ধরনের পরিবহনে। ঘরমুখো যাত্রীদের কাছ থেকে বরিশাল, টেকেরহাট, ভাংগা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জসহ সব রুটেই দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বোঝাই করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের নিষেধ থাকা সত্বেও লঞ্চ বাসসহ সব ধরনের যানবাহনের শ্রমিকরা অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে বাস, মিনিবাস, টেম্পু, অটোবাইক, নছিমন, সবুজ বাংলাসহ সকল যানবাহন অবাধে চলতে দেখা গেছে। বাগেরহাটের মোল্লারহাট এলাকার যাত্রী সাজন হক বলেন, ‘সাধারণ সময় বাসে তিনশ’ টাকা ভাড়া নিলেও এই সময় যাত্রীদের জিম্মি করে পাঁচশ’ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া বাসের ভেতরে ও বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে।’ শিমুলিয়া ঘাট থেকে লঞ্চে আসা যাত্রী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘লঞ্চে ৩৩ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা করে নিচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়েই এই অতিরিক্ত ভাড়া গুণছি। কি করব, বাসার সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ করব, তাই অতিরিক্ত ভাড়া দিচ্ছি।’ স্পিডবোটের যাত্রী তমা আক্তার বলেন, ‘এই নৌরুটে নিয়মিত আমি স্পিডবোটে চলাচল করি, স্বাভাবিক সময়ে ১২০ টাকা ভাড়া নিলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা। এ ছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পিডবোটে লাইফ জ্যাকেট দেওয়ার কথা থাকলেও কেউ এই নিয়ম মানছে না। শুধু আমি নয় সকল যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে।’ মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আনোয়ার হোসেন ভুইয়া বলেন, ‘কাঁঠালবাড়ি ঘাটের পাশাপাশি লঞ্চের জন্য আলাদভাবে চালু রাখা হয়েছে কাওড়াকান্দি ঘাট। এই নৌরুটে ১৯টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও ১০০ টিরও বেশি স্পিডবোট চলাচল করে। ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিনশ’র বেশি সদস্য মোতায়েন রয়েছে।’ রাইজিংবিডি/মাদারীপুর/২৪ জুন ২০১৭/বেলাল রিজভী/রুহুল