সারা বাংলা

ঈদ নেই ছবেদ আলীর পরিবারে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : ‘তিন বেলা ভাত-ই খাইতে পারি না, আর আমাগো ঈদ। পরের জমিতে কাজ করে যে কয়টা টাকা পাই, তা দিয়ে ছেলেদের ওষুধ কিনতেই শেষ। ঈদ করব কীভাবে? এবারের ঈদে কাউরেই নতুন কাপড় কিনা দিতে পারি নাই।’- চোখের জল মুছতে মুছতে এ কথাগুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জের বানিয়ারী গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী কৃষক ছবেদ আলী। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের বানিয়ারী গ্রামের ছবেদ আলীর তিন ছেলেই পঙ্গু। যে কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত এই পরিবারটি। ছবেদ আলী জানান, সমাজের আর ১০টি শিশুর মতো এরাও এক সময় সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। অন্য শিশুর মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছে। প্রত্যেকে ১০-১২ বছর বয়স পর্যন্ত স্বাভাবিক চলাফেরা ও খেলাধুলা করলেও হঠাৎ অজানা রোগে তিন ছেলের হাত ও পা শুকিয়ে যেতে থাকে। প্রথমে এলাকায় চিকিৎসা করানো হয়। ফল না পেয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তার বিশ্বাস উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে ছেলে ইস্রাফিল (২৬), ইজাবুল (২৪) ও এনামুল (২২) সুস্থ হয়ে উঠত। তিন ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগাতে জমি যা ছিল, বিক্রি করে এখন নিঃস্ব। তার পরেও ছবেদ আলী ছেলেদের চিকিৎসা করাতে চান। ছবেদ আলীর বিবাহযোগ্য একটি মেয়ে রয়েছে। মেয়ে আছমা খানম সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। কৃষি ব্যাংকে তার ৬০ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মারা যেতে চান না তিনি। কিন্তু তার আয়ের উৎস নেই। যেটুকু ভিটা আছে, তা ব্যাংক নিয়ে নিলে পথে বসতে হবে। অসহায় এ পরিবারটির প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনলাইনভিক্তিক স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন সোনালী ভবিষ্যত। ছবেদ আলীর বাড়িতে গিয়ে সংগঠনের সভাপতি কামরুল ইসলাম দিপু নগদ ১৫৫০০ টাকা, শাড়ি ও লুঙ্গি তুলে দেন। এ সময় ওই সংগঠনের সদস্য প্রভাষক মিন্টু রায়, শিক্ষিকা জান্নাত সুলতানাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষক ছবেদ আলী। তাদের সাহায্য পেলে ছেলেদের চিকিৎসা করাতে পারবেন তিনি। সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা: ছবেদ আলী হাওলাদার, হিসাব নম্বর ৩৪১৮২২৪৪, সোনালী ব্যাংক, কোটালীপাড়া শাখা, গোপালগঞ্জ। বিকাশ নম্বর- ০১৭৪৭৭৭৪৭৩৪। রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/২৬ জুন ২০১৭/বাদল সাহা/বকুল