সারা বাংলা

মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে সরকার

এম.শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা থেকে : বিরলরোগে আক্রান্ত ১১ বছরের শিশু মুক্তামনিকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তার উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। মুক্তামনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে। সোমবার রাত ১১টায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন তৌহিদুর রহমান। এর আগে সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশনায় সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তার বাড়িতে গিয়ে মুক্তামনিকে নিয়ে আসেন। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন তৌহিদুর রহমান জানান, স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন। রাত ১১টায় তাকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এর ফরেনসিক মেডিসিনের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীন মুক্তামনির রোগ সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, বিশ্বের মধ্যে দুইজন বৃক্ষমানব ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ইন্দোনেশিয়ায়, আরেকজন বাংলাদেশের আবুল বাজানদার। তার চিকিৎসা বাংলাদেশেই হয়েছে। মুক্তামনির চিকিৎসাও বাংলাদেশে হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ বা বিএসএমএমইউ-তে বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করে মুক্তামনিকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, মুক্তামনির এ রোগটি বিরল। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, এর নাম হাইপারকেরাটসিস। সর্বশেষ যে টেস্ট রিপোর্ট তাদের হাতে এসেছে, তাতে করে মনে হচ্ছে এটি ক্যান্সার নয়। এটি জটিল হলেও নিরাময়যোগ্য। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম শিশু মুক্তামনিকে দেখতে যান। এ সময় সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মুক্তামনির বাবা ইব্রাহীম হোসেন বলেন, তার মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগ দায়িত্ব নিয়েছে, এতেই তিনি খুশি। তার টাকা-পয়সার দরকার নেই, তার মেয়ে যেন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসে, সবার কাছে সেই দোয়া কামনা করেন তিনি। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের ইব্রাহীম হোসেন ও আসমা খাতুন দম্পতির মেয়ে মুক্তামনি বিরল রোগে আক্রান্ত। এতে মুক্তার ডান হাত ফুলে যায়। হাত পচে তাতে পোকা ধরে। বুকের একাংশেও ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ। দীর্ঘ নয় বছরেও রোগ ধরতে পারেননি চিকিৎসকরা। সম্প্রতি মুক্তামনির বিরল রোগের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয় দেশজুড়ে। এরপর অনেকেই এগিয়ে এসেছেন, হাত বাড়িয়েছেন চিকিৎসায়। রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/১১ জুলাই ২০১৭/এম. শাহীন গোলদার/বকুল