সারা বাংলা

হত্যার দায়ে বাবার ৭ বছর কারাদণ্ড

নেত্রকোনা প্রতিনিধি : কান্না করায় বিরক্ত হয়ে আট বছরের কন্যাকে গলাটিপে হত্যার দায়ে বাবা নবী হোসেনকে (৫৫) সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ঘটনায় অপর দুই ব্যক্তির প্রত্যেককে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা দুই আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।  মামলার প্রধান আসামি শিশুটির বাবা নবী হোসেন জামিনে বেরিয়ে পলাতক রয়েছেন। নবী হোসেনের বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের বীর বাওলা গ্রামে। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই ব্যক্তি হলেন- জেলার পূর্বধলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের কোনাডহর গ্রামের ইসহাক মিয়া (৩৫) ও সবুজ মিয়া (৩৮)। আদালত সূত্রে জানা গেছে, নবী হোসেন ২৭ বছর আগে জেলার পূর্বধলার কোনাডহর গ্রামের আয়েশা খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে চার ছেলে ও তিন মেয়ে। ২০১২ সালের মে মাসে দাম্পত্য কলহের কারণে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের ছোট দুই সন্তান আবদুর সালাম (১০) ও রোকসানা খাতুন (৮) বাবার কাছে থেকে যায়। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এ দুই সন্তানকে নিয়ে নবী হোসেন কোনাডহর গ্রামে স্ত্রীকে নিয়ে যেতে আসেন। কিন্তু আয়েশা খাতুন স্বামীর সঙ্গে যেতে রাজি হননি। পরে ওই দিন রাতে সন্তানদের নিয়ে একই গ্রামে তার আত্মীয় ইসহাক মিয়ার বাড়িতে থাকেন। রাত ১০টার দিকে রোকসানা মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য কান্না শুরু করে। তখন নবী হোসেন কান্না থামাতে গিয়ে রাগের মাথায় রোকসানার গলাটিপে ধরেন। এতে শিশুটি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। এরপর ইসহাক মিয়া ও তার ভাই সবুজ মিয়ার সহায়তায় শিশুটির লাশ চাদর দিয়ে মুড়িয়ে বাড়ির পাশের জঙ্গলে মাটি চাপা দেন। পর দিন সকালে নবী হোসেন ছেলে সালামকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। চারদিন পর মেয়ের সন্ধান জানতে চাইলে নবী হোসেন শিশুটির মা আয়েশা খাতুনকে জানান, শিশুটিকে তিনি ইসহাকের বাড়িতে রেখে এসেছেন। এরপর ইসহাক সব কিছু বলে দেন। এ ঘটনায় ১০ ডিসেম্বর আয়েশা খাতুন বাদী হয়ে নবী হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পূর্বধলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই বছরের ২৪ জুন মামলার প্রধান আসামি নবী হোসেন জামিনে বের হন। এরপর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেছেন। আদালতে সরকার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জি এম খান পাঠান বিমল এবং আসামিপক্ষে ছিলেন শাহজাহান রেজাউল ও পূরবী কুণ্ডু। রাইজিংবিডি/নেত্রকোনা/২০ জুলাই ২০১৭/ইকবাল হাসান/বকুল