সারা বাংলা

জমে উঠেছে আটঘরের নৌকার হাট

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : বর্ষা মৌসুমে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির খাল-বিল পানিতে তলিয়ে যায়। তখন চলাচলের বাহন হয়ে ওঠে নৌকা। গৃহস্থলীর কাজ থেকে শুরু করে চলাচলের জন্য নৌকার উপর নির্ভর করতে হয়। ঝালকাঠির আটঘরে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট। নৌকার যোগান দিতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। তবে প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকায় দাদন ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। আটঘরের হাটে গিয়ে দেখা গেছে, জল ও স্থলের মাইলখানেক এলাকা জুড়ে সারি সারি নৌকা। কুড়িয়ানা ইউনিয়নে আটঘর হাট। নৌকা বেচা-কেনায় অর্ধশত বছরের ঐতিহ্য রয়েছে এই হাটের। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের চার মাস জমজমাট হয়ে ওঠে এখানকার নৌকার ব্যবসা। হাট বসে প্রতি শুক্রবার। আড়ৎদার ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, প্রতি হাটে ১০-১৫ লাখ টাকার নৌকা বেচা-কেনা হয়। এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ঝালকাঠির কয়েকশত পরিবার। প্রায় অর্ধশত বছর ধরে এখানে নৌকার হাট বসে। এটা  দক্ষিণাঞ্চলের নৌকার সবচেয়ে বড় হাট।  

ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এখানে নৌকা কেনা-বেচা করেন। প্রতি মৌসুমে কোটি টাকার নৌকা বেচা-কেনা হয়। হাটে আসা নৌকার ক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, তার বাড়ি ঝালকাঠির সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নে। বর্ষাকালে চলার জন্য তাদের নৌকা দরকার। তাই নৌকা কিনতে এসেছেন। একখানা নৌকা কিনেছেন সাড়ে চার হাজার টাকায়। নৌকা বিক্রেতা সালাম তালুকদার বলেন, বর্ষাকালে প্রতি হাটে তিনি ১০-১২টি নৌকা বিক্রি করতে পারেন। এতে তার দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা লাভ হয়। নৌকার কারিগর বেলায়েত হোসেন বলেন, তারা ভালো নেই। লোহা, কাঠ ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের লাভ কম হয়। সরকারিভাবে যদি তাদের আর্থিক সাহায্য করা হতো, তাহলে ভালো হতো। হাট ইজারাদার মোস্তফা কামাল জানান, আটঘরের নৌকার হাট অর্ধশত বছরের পুরাতন। এখানে প্রতি হাটে ১০-১২ লাখ টাকার নৌকা বিক্রি হয়। পুরো মৌসুমে কোটি টাকার বেশি বিক্রি হয়। ঝালকাঠি বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক মো. জালিস মাহমুদ বলেন, নৌকা নির্মাণ শিল্পকে প্রসারিত করতে কারিগরদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। রাইজিংবিডি/ঝালকাঠি/২৬ জুলাই ২০১৭/অলোক সাহা/বকুল