সারা বাংলা

পাহাড়ি শিশুদের আলোকিত করছে শিক্ষা কেন্দ্রটি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : চারিদিকে পাহাড়, জঙ্গল আর সবুজের সমারোহ। এই পাহাড়-জঙ্গল ভেদ করে তৈরি হয়েছে আঁকা-বাকা পথ। এই পথে দল বেঁধে স্কুলে যায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোমলমতি শিশুরা। শিশুদের পরনে আকাশি-সবুজ রঙের স্কুলের পোশাক। সবার হাতে বই-খাতা। হৈ-হুল্লোড় করে স্কুলের দিকে এগিয়ে যায় তারা। পাহাড়ের মধ্যে আধাপাকা টিনের ঘর। একটি মাত্র কক্ষ। এই কক্ষেই শিক্ষা নিতে আসা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরা স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে শিক্ষক, চিকিৎসক হওয়ার বা বড় চাকরি করার। এই স্বপ্ন পুঁজি করেই প্রতিদিন পাহাড়ি পথে হেঁটে মৌলভীবাজারের লংলিয়া পাহাড়ে বসবাসরত খাসিয়া সম্প্রদায়ের শিশুরা শিক্ষা নিতে আসে লংলিয়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লংলিয়া পুঞ্জি। পান, লেবু, আনারসসহ বিভিন্ন জাতের ফল চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে এই পুঞ্জিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা। নিজেদের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৩০ বছর আগে এখানে স্থাপন করা হয় এই শিশু শিক্ষা কেন্দ্রটি। বর্তমানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর অর্ধশত শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক আছেন দুইজন। আশপাশের পাহাড়ে বসবাসকরা শিশুরা এ স্কুলে পড়তে আসে। দূর থেকে কষ্ট করে হেঁটে স্কুলে এলেও শিশুদের মধ্যে নেই কষ্টের ছাপ। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার অদম্য ইচ্ছা তাদের। সকালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো তারাও সারিবদ্ধ হয়ে গায় জাতীয় সংগীত।

 

কথা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইগ্নোসিউস মানকিনের সঙ্গে। তিনি জানান, শহরের স্কুলের মতো এখানে পৃথক শ্রেণী কক্ষের ব্যবস্থা নেই। তাই শিক্ষার্থীদের দুই ভাগে পাঠদান করা হয়। সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১ম ও ২য় শ্রেণী এবং  বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। স্কুলে শিক্ষার্থী ৫০ জন। অভিভাবকরা জানান, এই এলাকার একমাত্র স্কুল এটি। এলাকার শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে যদি স্কুলটি সরকারি করা হয়, তাহলে শিক্ষার মান বাড়বে। রাইজিংবিডি/মৌলভীবাজার/০৯ আগস্ট ২০১৭/হোসাইন আহমদ/বকুল