সারা বাংলা

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে মানুষ উদ্বিগ্ন : হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ। তবে তিনি এও বলেছেন, দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন বলেই আদালত এমন রায় দিতে পেরেছেন। শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের শহীদ ডা. কায়ছার রহমান অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী প্রশিক্ষণ কর্মশালা এবং শোক দিবস উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও দাওয়াতি মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হানিফ এ কথা বলেন। রাজশাহী বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই মাহফিলের আয়োজন করে। মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘দেশের জনগণ আজ উদ্বিগ্ন। এই ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে দেশের মধ্যে একটা আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। আমি আদালতের রায় নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। কিন্তু আদালতের বিচার্য বিষয়ের বাইরে পর্যবেক্ষণের কথা বলে জাতির মধ্যে যে বিতর্কের সৃষ্টি করা হয়েছে সেই কথাটা আমি বলতে চাই।’ হানিফ বলেন, ‘রায়ের পাশে পর্যবেক্ষণে অনেক কথা বলা হয়েছে। সংসদ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যরা অপরিপক্ক। তারা নিজেরাই (এমপিরা) যোগ্য কি না এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আজকে এই রায় যারা দিয়েছেন, আপনারা কার দ্বারা নিয়োজিত? কার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত? এই সংসদের মাধ্যমে গঠিত সরকার, সেই সরকারের রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত। যদি সংসদ সদস্যরা অযোগ্য ব্যক্তি হন, তাহলে আপনারা অযোগ্য ব্যক্তির দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এখানে কথা বলছেন।’ তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর একটা অনুচ্ছেদে ছিল- কোনো বিচারপতি যদি শারিরীকভাবে অসমর্থ হন বা তার বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিক অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সংসদে এলে সেখানে আলোচনার মাধ্যমে ওই বিচারপতিকে অপসারণের ক্ষমতা সংসদ রাখতে পারে। এই সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতাকে হরণ করা হলো।’ আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এখানে জাতির পিতার বাইরে অন্য কারও কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। এই একক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যারা কথা বলতে চান, তারা মূলত স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। আমরা পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, সাংবিধানিক পদে থেকে আপনি ইতিহাস বিকৃতি করবেন, এটা বাংলাদেশের জনগণ কখনো মেনে নেবে না।’ সমাবেশে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংসদ খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সরদার তমিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে এতে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল ও বিভাগীয় কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কার্যক্রমে নিয়োজিত রাজশাহী বিভাগের আলেম-ওলামাগণ অংশ নেন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ আগস্ট ২০১৭/তানজিমুল হক/শাহনেওয়াজ