সারা বাংলা

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ধরলার পানি সামান্য কমলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের ৭৬৩ গ্রামের ৪ লক্ষাধিক মানুষ। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন পাকা সড়ক, উঁচু বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। গত তিনদিনে বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে দুইজন।  পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ধরলার পানি বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে চার শতাধিক ঘরবাড়ি। গবাদি পশু নিয়ে পাকা সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন মানুষ।  বন্যা দুর্গতদের  মাঝে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য।  

কুড়িগ্রামের টগরাইহাট এলাকায় বন্যায় রেল সেতুর গার্ডার দেবে যাওয়ায় সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কের চারটি পয়েন্টে ধসে যাওয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সোনাহাট স্থলবন্দরসহ নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সাড়ে ৫ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তলিয়ে গেছে ৫০ হাজার হেক্টর জমির আমন ক্ষেত। সদরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল হক দুলাল বলেন, ‘এমন বন্যা আমার জীবনে দেখিনি। কাঁঠালবাড়িসহ আশপাশের সব ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।’ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মঞ্জু বলেন, ‘সদর উপজেলার ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমরা সাধ্যমত চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধ্যমে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের খাবারের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।’ কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৬৫১ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

   

রাইজিংবিডি/কুড়িগ্রাম/১৬ আগস্ট ২০১৭/বাদশাহ সৈকত/উজ্জল