সারা বাংলা

পানি বাড়ছে, বাঁধে শতাধিক পরিবার

ফরিদপুর প্রতিনিধি : পানির তোড়ে ভেসে গেছে ঘর, কিংবা ঘরের মধ্যে তিন থেকে ছয়ফুট পানি, তাই শুক্রবার পর্যন্ত চরভদ্রাসনের বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক পরিবার। এ সব পরিবার ভুগছে খাবার সংকটে। সরকারি সাহায্য দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যদিও প্রশাসনের দাবি, ত্রাণের ঘাটতি নেই। শুধু সময়ের অপেক্ষা। গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত চার থেকে পাঁচ দিনে ফরিদপুর সদর, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার মোট ১০টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। সকালে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার বন্যা ও ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাংশু সোম মহান চরের বানভাসি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের একটি অংশে ক্ষুদ্রাকারের ফাটল দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, বাঁধটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, কোথাও ত্রুটি দেখা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে বড় ধরনের ঘটনা না ঘটে। কিছু কিছু এলাকায় সাপের উপদ্রব লক্ষ্য করা গেছে। বন্যায় আক্রান্তরা জানান, সর্বত্র পানি উঠে যাওয়ায় ঘরে ঢুকে পড়ছে সাপসহ পোকামাকড়। যদিও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সাপে কাটা রোগীর জন্য এন্টিভেনাম ইনজেকশন পর্যাপ্ত মজুত রাখা হয়েছে। ফরিদপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিচ্ছে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন। অনেকে আবার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ ঘরের মধ্যে চৌকির উপরে রান্না করছেন। ফরিদপুরের বিভিন্ন চরে বসবাসকারীরা সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে। চরের ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় গরু, ছাগল, ভেড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে। শুকনো জায়গার অভারে পশু খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। চরভদ্রাসনের শতাধিক পরিবার বাঁধ ও ফ্লাড সেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জি এম আব্দুর রউফ জানান, বন্যার পানিতে ১১শত ১০ হেক্টর জমির বোনা আমন, ২০৪ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৭৭ হেক্টরের সবজি, ১৫ হেক্টর জমির কলা, ০৪ হেক্টর জমির মরিচ  নিমজ্জিত হয়েছে। তিনি জানান, পানি বাড়লে আরো ফসল নিমজ্জিত হতে পারে। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া জানান, আক্রান্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ত্রাণ মজুত রাখা হয়েছে। সময়মত সকলকে পৌঁছে দেওয়া হবে।

   

রাইজিংবিডি/ফরিদপুর/১৮ আগস্ট ২০১৭/মো. মনিরুল ইসলাম টিটো/বকুল