নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুল জলিল মিয়া ও উপ-রেজিস্টার শাহজাহান আলী মণ্ডলসহ পাঁচজনকে জামিন দিয়েছে আদালত। আজ রোববার দুপুরে রংপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার এ আদেশ দেন। এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে- এত দিন কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি- বর্তমান ভিসিকে তার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ৪ অক্টোবর। গত ২০ জুলাই ভিসি আব্দুল জলিল মিয়া ও উপ-রেজিস্টার শাহজাহান আলী মণ্ডল আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এ মামলার অপর তিনজন আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রংপুর কোতোয়ালি থানায় দুদকের পক্ষ থেকে ভিসি আব্দুল জলিল মিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেন তৎকালীন উপপরিচালক আব্দুল করিম। মামলা দায়েরের তিন বছর দুই মাস পর দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আদালত পরিদর্শক মো. বুল মিয়া জানান, ভিসি ও উপ-রেজিস্টার হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়ায় এ আদালত তাদের জামিন দিয়েছে। অপর তিন আসামি বেরোবি’র উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এ টি এম গোলাম ফিরোজ, সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার আশরাফুল আলম এবং সহকারী রেজিস্ট্রার মোর্শেদ-উল-আলম রনি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। দুদকের উপপরিচালক মোজাহার আলী সরদার জানান, চার্জশিটে বলা হয়েছে সাবেক উপাচার্য আব্দুল জলিল মিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার ও ইউজিসি’র নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিধিবহির্ভূতভাবে নিজ মেয়ে, ভাই ও ভাতিজাসহ অন্যদের চাকরি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। স্বজনপ্রীতি করে নিয়োগ দিয়ে সরকারেরর ৯০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি করেছেন। এ সব অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় গত ১৯ মার্চ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জলিল মিয়াসহ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অধ্যাপক ড. আব্দুল জলিল মিয়া বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে কর্মরত। জুলাই মাসে বেরোবির সিন্ডিকেটের সভায় দুদকের মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পদোন্নতি দেন বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে কেন তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আদালতের পক্ষ থেকে ভিসিকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। রাইজিংবিডি/রংপুর/২০ আগস্ট ২০১৭/নজরুল মৃধা/বকুল