সারা বাংলা

জেলেদের জালে ওঠা তরুণী অপহরণের শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : বরিশাল নগরীর তালতলা খেয়াঘাট এলাকায় কীর্তনখোলা নদীতে জেলেদের জালে উদ্ধার হওয়া তরুণী অপহরণের শিকার বলে পুলিশকে জানিয়েছে।  এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তরুণীকে  দেখতে বোন পরিচয়ে আসা সুমিকে আটক করেছে পুলিশ। আর তখন জানা গেল তরুণীর নাম প্রিয়া আক্তার রুমা। সে পাথরঘাটা উপজেলার বাইনচট্টি গ্রামের খোকন গাজীর মেয়ে। গত মঙ্গলবার ঢাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য পাথরঘাটা থেকে ঢাকাগামী মৌসুমী-২ লঞ্চে ওঠে রুমা ও সুমি। রাতে রুমা লঞ্চের নিচতলার পিছনের টয়লেটে যায়। দীর্ঘক্ষণ হয়ে যাওয়ার পর ফিরে না আসায় রুমাকে খুঁজতে সুমি টয়লেটের স্থানে যায়। কিন্তু তার সন্ধান পায়নি। পরবর্তীতে লঞ্চের ভেতরে খোঁজাখুঁজি করে। বিষয়টি লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে তারা বরিশাল আইনশৃংখলা বাহিনীকে অবহিত করে। লঞ্চের স্টাফদের ধারণা ছিল, রুমা লঞ্চের পিছন থেকে নদীতে পড়ে গেছে। বুধবার বিকেলে কীর্তনখোলা নদীর তালতলা খেয়াঘাট এলাকায় জেলেদের জালে প্যাচানো অবস্থায় অচেতন রুমাকে উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ তাকে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। রুমা উদ্ধার হয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে সুমি নামের এক তরুণী ছুটে আসে হাসপাতালে। সে নিজেকে রুমার বোন বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু জ্ঞান ফেরার পর রুমা জানান, সুমি তার বোন নয়। সে অপহরণকারী চক্রের সদস্য। লঞ্চে রুমাকে পানের সঙ্গে এক ধরনের চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানো হলে তার পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এক পর্যায় সে লঞ্চের পেছনে টয়লেটে গেলে নদীতে পড়ে যায়। বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ শোনেনি। কয়েক ঘণ্টা নদীতে সাঁতার কাটার পর সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর আর কিছু তার মনে নেই বলে জানায় রুমা। রুমা জানায়, পোশাক কারখানায় চাকরি করার সুবাদে সুমির সঙ্গে তার পরিচয়। সেই সূত্র ধরে তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে সুমি। কিন্তু সুমির অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি রুমা জানত না। নারায়ণগঞ্জে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে রুমাকে মৌসুমী লঞ্চে ওঠায় সুমি। বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ শাহ মো. আওলাদ হোসেন জানান, রুমাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। এ ঘটনায় রুমার কথিত বোন সুমিকে আটক করা হয়েছে। রুমার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হবে। রাইজিংবিডি/বরিশাল/২৪ আগস্ট ২০১৭/জে. খান স্বপন/বকুল