সারা বাংলা

কিশোরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা দূর করার দাবি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে যারা বাদ পড়েছেন তারা এ বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের দাবিতে আলোচনা সভা ও মানববন্ধন করেছেন। শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদরে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার চত্বরে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। তারা তাদের ভাতা প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা দূর করার দাবি জানান। মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়া শতাধিক ব্যক্তি এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন মো. রুকন উদ্দিন, মাধব গোবিন্দ দাস, মো. নাজমুল আলম, জামাল উদ্দিন, ডা. আমির হোসেন, মজিবুর রহমান, আব্দুল নৌশাদ, আবু সালেক, নুরুল হক। তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘যাচাই বাছাইয়ের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকে তাদের বৃদ্ধ বয়সে এসে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। তারা আরো বলেন, আমরা স্বাধীন দেশের পতাকা নিয়েই বাঁচতে চেয়েছিলাম। আমাদের সম্মানে যখন আপনারা ভাতা প্রদান করছেন, তবে কেন দু’দিন পরপর প্রহসন করছেন। ঈদের আগে ভাতা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত ১০ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক সার্কুলারে ১৭ নম্বর নির্দেশনার বেড়াজালে পড়ে এ অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। এ নির্দেশনার কারণে জেলা প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।’ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (বাজেট) মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই সার্কুলারে মুক্তিযোদ্ধাদের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের ভাতা ও বোনাসসহ ৯৬৩ কোটি ৩৬লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলার ৩৫৭৭ জন মুক্তিযোদ্ধার বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। প্রতি মুক্তিযোদ্ধার জন্য ৫২ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে এ সার্কুলারে ১৯টি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে ১৭ নম্বর নির্দেশনায় বলা হয়, উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটি যাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা নন বলে প্রতিবেদন দিয়েছে তাদের ভাতা আপাতত না দিয়ে কেন তাদের ভাতা বন্ধ করা হবে না-এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘এ খবর জানার পর তারা গত ২১ আগস্ট কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন সুরাহা মিলছে না।’ কিশোরগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তিনিও একটা সিদ্ধান্তে যেতে মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জেলায় খোঁজ-খবর রাখছেন। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি সুরাহা করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দেখি, শেষ পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় কিনা।’ রাইজিংবিডি/কিশোরগঞ্জ/২৬ আগস্ট ২০১৭/রুমন চক্রবর্তী/রুহুল/শাহনেওয়াজ