সারা বাংলা

হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিক নিখোঁজ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও মাধবপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক হোসাইন আহমেদ রফিক। সোমবার রাত ১০টা থেকেই এই ছাত্রদল নেতার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের গোয়াছনগর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জজ মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে পিতা জজ মিয়া থানায় ছেলে নিখোঁজ হয়েছে মর্মে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সাধারণ ডায়েরি ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত প্রায় ৮টার দিকে হোসাইন আহমেদ রফিক পাওনাদারের টাকা পরিশোধের জন্য বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। রাত ১০টার পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি শুরু করেন। কিন্তু তাকে আর পাওয়া যায়নি। তবে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের উত্তর সুরমার কাছে রাস্তার পাশে একটি জঙ্গলে পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার গোয়াছনগর গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে হোসাইন আহমেদ রফিক ৬ মাস পূর্বে উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম হাজী জাহেদ আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা মাসুদ খান ও সাংবাদিক অলিদ মিয়ার সাথে মিলে সুরমা চা বাগানের ২০নং সেকশনে ২ কোটি টাকার গাছের মহাল ক্রয় করেন। পরে মাসুদ খান ও অলিদ মিয়ার কাছ থেকে তিনি একাই পুরো ব্যবসা ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে কিনে নেন। মাসুদ খান ও অলিদ মিয়াকে জামানত হিসাবে একটি ৪০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন রফিক। সোমবার ১০ লাখ টাকা প্রদান করে চেক ফেরত নেওয়ার ধার্য্যকৃত তারিখ ছিল। বিষয়টির মধ্যস্থতা করছিলেন উপজেলা যুবদল সভাপতি এনায়েতউল্লাহ। এনায়েতউল্লাহ টাকা নিয়ে আসার জন্য খবর দিলে রফিক বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর সোমবার রাত ১০টা থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আজ বুধবার সকাল ১১ টায় তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর জানান, পুলিশ বিভিন্ন স্থানে তার সন্ধান করছে। মাসুদ খানের সাথে তার ব্যবসায়িক লেনেদেন নিয়ে সমস্যা ছিল। রফিকের পিতা থানা জিডি করেছেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেন। রফিকের পিতা জজ মিয়া জানান, সোমবার রাত প্রায় ৮টার দিকে তার ছেলে পাওনাদারের টাকা পরিশোধে তার পুত্র বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ১০টার পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ছেলের সন্ধানে তিনি পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবেরও শরণাপন্ন হয়েছেন। এ ব্যাপারে পাওনাদার অলিদ মিয়া জানান, রফিকের সাথে তাদের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। সোমবার ছিল ১০ লাখ টাকা প্রদানের তারিখ। এর আগেও সে তারিখ করে টাকা দেয়নি। টাকা আত্মসাতের জন্য এই নিখোঁজ নাটক। কোন পরিবারের সদস্য নিখোঁজ হলে সেই পরিবারে যে ধরনের উদ্বেগ থাকার কথা রফিকের পরিবারে সে ধরনের উদ্বেগ দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এসএম রাজু আহম্মেদ জানান, রফিককে উদ্ধারে পুলিশ তৎপরতা শুরু করেছে। তিনি উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রকৃত কারণ বলা যাবে না। হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদল সভাপতি এমদাদুল হক ইমরান এক বিবৃতিতে নিখোঁজ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি হোসাইন আহমেদ রফিককে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পাবার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

   

রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/৩০ আগস্ট ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু