রাজবাড়ী প্রতিনিধি : স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ না রাখার অভিযোগে এক যুবককে আটকে রাখা হয়েছে। রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই যুবককে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে। আটকে রাখা যুবকের নাম মান্নান শেখ (৩০)। তিনি ইসলামপুর ইউনিয়নের শেকাড়া গ্রামের মো. হানিফ শেখের ছেলে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের নিচ তলায় ইয়াসিন ও জীবন নামে দুজন চৌকিদার মান্নানকে পাহারা দিচ্ছেন। আর দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে মান্নানকে আটকে রাখা হয়েছে। চৌকিদার ইয়াছিন বলেন, ‘চেয়ারম্যান আমাদেরকে আটকে রাখা মান্নানকে পাহারা দিতে বলেছেন। ঈদের দিন সন্ধ্যা থেকে তাকে আমরা পাহারা দিচ্ছি। তার খাবার দেওয়া ও দেখাশোনা করছি।’ মান্নান শেখ জানান, তিনি প্রায় ১০ বছর আগে একই ইউনিয়নের খালকুলা গ্রামের মৃত তমিজ উদ্দিনের মেয়ে সেলিনাকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পর তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। পরে তার স্ত্রী ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। এ পর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। পরে তিনি শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকুনদিয়া গ্রামের এসকেন মিয়ার মেয়েকে বিয়ে করে। ঈদ উপলক্ষে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে এলে প্রথম স্ত্রীর বড় ভাই ফারুক শেখ তাকে মারধর করে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘এই ছেলেটি স্ত্রী ও সন্তান রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। দীর্ঘদিন স্ত্রী ও সন্তানের খবর না নেওয়ায় মেয়ের অভিভাবকরা ওকে আটকে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি একটি সালিশের মাধ্যমে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের নামে জমি লিখে দিতে বলেছি।’ মান্নানের বাবা হানিফ শেখ বলেন, ‘আমার ছেলে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তার বিচার আইন অনুযায়ী হোক। বিচারের নাম করে আমার ছেলেকে একটি অফিস রুমে আটকে রাখা হয়েছে। গত রোববার চেয়ারম্যান একটি সালিশের মাধ্যমে জমি লিখে দেওয়ার রায় দিয়েছেন। যতোদিন জমি লিখে না দিবো ততোদিন আমার ছেলে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পরে আমি নিরুপায় হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি।’ উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, ছেলেটি যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে তার বিচার আইন অনুযায়ী হবে। এভাবে আটকে রাখাটা সম্পূর্ণ বেআইনী। আমি বিষয়টি থানাকে অবগত করেছি। রাইজিংবিডি/রাজবাড়ী/৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭/সোহেল মিয়া/উজ্জল/রুহুল