সারা বাংলা

কূটনৈতিকভাবেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কক্সবাজার প্রতিনিধি : যুদ্ধ নয়, কূটনৈতিক তৎপরতার সফলতা এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট রয়েছে। কোনো ধরনের উসকানিতে আমরা জবাব দেই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণই আমরা করি। যুদ্ধ নয়, কূটনৈতিক তৎপরতা এবং আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হবে।’ রোববার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের হিলটপ সার্কিট হাউসে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিক তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল মিয়ানমারের ইউনিয়ন মন্ত্রী (কেবিনেট মিনিস্টার) বাংলাদেশে আসছেন। তিনি এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট ও সমস্যা নিয়ে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করা হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভূখণ্ডে সন্ত্রাসী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর জায়গা নেই। আমরা এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করতে দেব না। সেই ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিরা শরণার্থী হয়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেওয়ার কথা উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিরা প্রাণ বাঁচাতে সহায়-সম্বল ছেড়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রোহিঙ্গারাও একই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সরকার মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট ও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশ সুনাম কুঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ও সরকারি সহায়তা ছাড়াও বাংলাদেশের মানুষ অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে দলে দলে মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসছেন। এটি বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি দেশে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করা ইউএনএইচসিআর হাইকমিশনার ফিলিপ গ্র্যান্ডিও বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকা নিয়ে প্রশংসা করেছেন। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিবির নিজস্ব হেলিকপ্টারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন স্থাপিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। এরপর তিনি নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শনে যান। সেখানকার তমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এরপর তিনি ঘুমধুম সীমান্তের কোনারপাড়া সংলগ্ন জিরো পয়েন্টে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে যান। পরে সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী আব্দুর রহমান, পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন, বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

   

রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১ অক্টোবর ২০১৭/সুজাউদ্দিন রুবেল/বকুল