সারা বাংলা

গোপালপুরে বই উৎসব পরিণত হলো মানববন্ধনে

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : উর্মি, নুপুর, পায়েল, সিয়াম টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বড়শিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সারা দেশের মতো আজ সোমবার সকাল ৯টায় তাদের স্কুলেও ছিল পাঠ্যপুস্তক বিতরণের উৎসব। অনুষ্ঠানের সব আয়োজনও চূড়ান্ত করেন শিক্ষকরা। কিন্তু স্কুলের তিন শতাধিক শিশুর মন ছিল ব্যথাতুর। তারা স্কুলের বই যথাসময়ে গ্রহণ না করে টানা তিন ঘণ্টা মানববন্ধন করেছে স্কুল প্রাঙ্গণে। তাদের সহপাঠী তৃতীয় শ্রেণীর এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের ঘটনার আসামিকে  গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে শেষ পর্যন্ত অভিভাবক ও শিক্ষকরাও সামিল হন। পরে স্কুল গভর্নিং বডির সভাপতি হারুন অর রশীদ তালুকদারের অনুরোধে দুপুর ১টার দিকে শিশুরা অনানুষ্ঠানিকভাবে বই নিয়েছে। স্কুল শিক্ষার্থী উর্মি ও নুপুর অভিযোগ করেছে, তাদের সহপাঠী তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে স্কুলে একা পেয়ে গত ৪ ডিসেম্বর যৌন হয়রানি করেন স্কুলের দপ্তরি  লুৎফর রহমান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীনের সহযোগিতায় ওই শিশুর বাবা গত ৬ ডিসেম্বর গোপালপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের ধারায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করছে না। তিনি নিয়মিত স্কুলে হাজিরা দেওয়াসহ ভয়ভীতি দেখানোর ফলে অনেক শিশু স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। স্কুল গভর্নিং বডির সভাপতি হারুন অর রশীদ তালুকদার অভিযোগ করেন, থানা পুলিশ অধিকতর তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করায় আসামি ও তার পরিবার রাজনৈতিক তদবির চালিয়ে পুলিশকে প্রভাবিত করছে। এ জন্য আসামি নিয়মিত স্কুলে হাজিরা দিলেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এ নিয়ে স্কুলের শিশুরা ভীতির মধ্যে রয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামও এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীন জানান, ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার খবর পেয়ে ওই শিশু ও তার বাবাকে অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। মৌখিক জবানবন্দি সত্য মনে হওয়ায় থানায় মামলা দায়েরে সহযোগিতা করা হয়। পুলিশ যাতে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়, এ জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা গোপালপুর থানার এএসআই ইয়াসিন আরাফাত জানান, বিষয়টি অধিকতর তদন্ত চলছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ হাসান আল মামুন জানান, ঘটনার বিষয়ে পক্ষে, বিপক্ষে কিছু কথা আসছে। এ জন্য নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে কিছু সময় লাগছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহাদুজ্জামান দুই দিন আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গত ২৫ ডিসেম্বর যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী ও তার বাবা-মা গোপালপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করছে না- বলে অভিযোগ আনেন। এ সময়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ শতাধিক গ্রামবাসি উপস্থিত ছিলেন। রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/১ জানুয়ারি ২০১৮/শাহরিয়ার সিফাত/বকুল