সারা বাংলা

চুয়েট ছাত্রদের ভাংচুর, প্রতিবাদে যানবাহন ধর্মঘট

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক ছাত্রের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার জের ধরে চুয়েট ছাত্ররা কাপ্তাই সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে যানবাহন ভাংচুর চালিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে কাপ্তাই সড়কে আজ বুধবার থেকে সকল যানবাহন বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছে কাপ্তাই বাস মালিক সমিতির নেতারা। মালিক সমিতির অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে চুয়েটের ছাত্ররা প্রায় তিন ঘণ্টা এই তাণ্ডব চালানোর পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক প্লাটুন পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছাত্ররা চুয়েটের ভিতর ১৬টি সিএনজি ট্যাক্সি এবং সড়কে দুটি বাস, মাইক্রোবাস, ১০টি মোটরসাইকেলসহ মোট ২৬টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় একটি বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে। চুয়েটের ১৪তম ব্যাচের তৌহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন ছাত্র অভিযোগ করে বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে চুয়েটের ইলেকট্রিকাল বিভাগের ১৪তম ব্যাচের আরিফুল ইসলাম কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে চুয়েটে আসার সময় রাউজানের দমদমা এলাকায় সিএনজি ট্যাক্সি ড্রাইভার ও আরো দুইজন গলায় ছুরি ধরে দুটি মোবাইল ফোন, নগদ ২৫ হাজার টাকা, একটি ল্যাপটপ ছিনিয়ে নিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় তাকে গলায় ছুরিকাঘাত করে জখম করে। পরে আক্রান্ত আরিফুল ইসলাম ক্যাম্পাসে গিয়ে বিষয়টি জানান। স্থানীয় সূত্র জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্ররা মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে। এক পর্যায়ে তারা ১৬টি সিএনজি ট্যাক্সি আটক করে ক্যাম্পাসের ভিতর ঢুকিয়ে রাখে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় গাড়ির টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে অবস্থান নেয়। এতে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে দুই পাশে বহু যানবাহন আটকা পড়ে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পাহাড়তলী এলাকার স্থানীয় কিছু লোক, মালিক মোটরসাইকেলযোগে গিয়ে বিক্ষোভরত চুয়েট ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। এ সময় উভয়পক্ষে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে চুয়েটে পূর্বেই ঢুকানো ১৬টি সিএনজি ট্যাক্সি ভাঙচুর করে। এরপর সন্ধ্যা ৭টার পর আরো বেশ কিছু ছাত্র জড়ো হয়ে কাপ্তাই সড়কে এসে দুটি বাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলসহ ১০টি যানবাহনে ভাংচুর চালায়। রাউজান থানার ওসি, নোয়াপাড়া পুলিশ, পূর্ব গুজরা পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত পৌনে ১০টার দিকে সড়ক থেকে ব্যারিকেড তুলে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। কাপ্তাই বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের গাড়ির কোনো দোষ ছিল না। কিন্ত চুয়েটের ছাত্ররা আমার ব্যক্তিগত একটি বাসসহ দুটি বাস ভাঙচুর করেছে এবং অপর একটি বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা সিএনজি ট্যাক্সিসহ অনেক যানবাহন ভাংচুর করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আজ বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাপ্তাই সড়কে বাস, ট্যাক্সি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছি।’’ সিএনজি ট্যাক্সি চালক এবং অন্যান্য গাড়ির চালক, মালিকরা আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।’’ রাউজান থানার ওসি কেপায়েত উল্লাহ বলেন ‘‘একজন ছাত্র ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার নামে চুয়েটের ছাত্ররা অবরোধ করে ভাংচুর করেছে। যে ছাত্র ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছে, সে এখন ক্যাম্পাসেই নেই। আন্দোলনরত ছাত্ররা তাকে আমাদের কাছে হাজির করতে পারেনি। হঠাৎ করে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’’

   

রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/৩ জানুয়ারি ২০১৮/রেজাউল/বকুল