সারা বাংলা

‘বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট ঘনীভূত হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হবে না বরং বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট ঘনীভূত হবে। সেটার লক্ষণ আমরা টের পাচ্ছি।’’ শুক্রবার সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া বাইপাসে বিআরটিএ প্রকল্প ও চোর লেন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। এর মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়েছে বলে বিএনপি নেতারা মন্তব্য করেছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘আজকে বেগম জিয়ার অনুপস্থিতিতে কাকে দলের দায়িত্ব দেওয়া হলো? যার আগে সাত বছর দণ্ড হয়েছে। তিনি দণ্ডিত ব্যক্তি। অপরাধী হিসেবে দণ্ডিত মানিং লন্ডারিংয়ের জন্য। আর এই মামলায় তাকে জরিমানাসহ ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে।’’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ায় গঠনতন্ত্র অনুসারে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করা তারেক রহমান মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় সাত বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তাকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।   ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭নং ধারাটা কেন তুলে দিয়েছে? এখন তো পরিষ্কার- দুনীতিবাজ যে কেউ তাদের নেতা হতে বাধা নেই।’’ বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ নম্বর ধারার ‘ঘ’তে বলা ছিল, ‘সমাজে দুর্নীতিপরায়ণ বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তি’ বিএনপির কোনো পর্যায়ের কমিটির সদস্য কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থীপদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। দল ভাঙার চেষ্টায় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে পারে, এই আশঙ্কায় গঠনতন্ত্রের একটি ধারা বাদ দেয় বিএনপি। গত ২৮ জানুয়ারি সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় দলটি। তিনি আরো বলেন, ‘‘এই রায় ঘোষণার আগে তড়িঘড়ি করে রাতের অন্ধকারে বিএনপি গঠনতন্ত্রের ৭নং ধারা বিসর্জন দিল, নির্বাসনে পাঠাল। ৭নং ধারা না থাকায় এখন দুর্নীতিবাজ কাউকে নেতা হতে বাধা নেই।’’ মন্ত্রী বলেন, ‘‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা এই সরকার করেনি, সরকারের কোনো হস্তক্ষেপও নেই। বেগম জিয়া যদি নিয়মিত হাজিরা দিতেন,  এই মামলায় রায় অনেক আগেই হয়ে যেত। তিনি নিজেই দেরি করে নির্বাচনকে সামনে রেখে এই পর্যন্ত মামলা টেনে নিয়ে এসেছেন। এটার জন্য তো বিএনপি দায়ী, এটার জন্য বেগম জিয়া ও তার বিজ্ঞ আইনজীবীরা দায়ী।’’ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করে। পরে এ মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১০ বছর ধরে পুরান ঢাকার বকশিবাজারের বিশেষ জজ আদালতে চলা এ মামলায় আদালতে হাজিরা নিয়ে খালেদা জিয়া ১৫০ বারের মতো সময় নিয়েছেন। মামলা বাতিল চেয়ে তার আইনজীবীরা বহুবার উচ্চ আদালতে গেছেন। মন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকা বিভাগীয় তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান, গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

রাইজিংবিডি/গাজীপুর/৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হাসমত আলী/বকুল