সারা বাংলা

হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, ৩০ জনের কারাদণ্ড

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সোহরাব হোসেন হত্যা মামলায় আদালত এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, একজনকে যাবজ্জীবন এবং অপর ২৯ আসামিকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আদালত দণ্ডপ্রাপ্ত ৩১ আসামির সবাইকে অর্থদণ্ডের নির্দেশ দেন। বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত আসামি আতহার আলী ওরফে পরান বাবুকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুর রশিদকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এছাড়া অপর ২৯ আসামিকে ১৪৭ ধারায় দুই বছর এবং ১৪৮ ধারায় তিন বছর করে কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে পৃথক দুটি ধারায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ২৯ আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাস করে কারাদণ্ডদেশ প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ ছয় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা গ্রামের ইউসুফ তরফদারের ছেলে আতহার আলী ওরফে পরান বাবু  এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছেন আব্দুর রশিদ। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হচ্ছেন, সিদ্দিকুর রহমান, হান্নান, রবিউল শিকদার, রাজ্জাক শিকদার, বাবুল হাওলাদার, আব্দুর রব শেখ, আব্দুল করিম শেখ, খলিল শেখ, হাদিস গাজী, মোজাহার গাজী, আনোয়ার হাওলাদার, কালা বাবুল, দিপু ওরফে দিপংকর, হাকিম, হেমায়েত, রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রব শিকদার, ফরহাদ হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল ওহাব, গোলাম ফারুক, বাবুল হাওলাদার, পিকলু সরদার, শুক ওরফে সুলতান, মাসুদ শেখ, তরিকুল ইসলাম, মোজাহার ওরফে মোতাহার গাজী, আসাদ শেখ ও আজাহার ওরফে মোজাহার তরফদার। আসামিদের সবার বাড়ি বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে বলে জানা গেছে। নিহত সোহরাব আলী শেখ বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাজিরহাট গ্রামের বাসিন্দা। মামলার নথি থেকে জানা গেছে, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে আসামিরা ২০০১ সালের ১৮ জুন সকাল ১০টার দিকে পরান বাবু এবং ইউসুফ আলীর নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল গাজিরহাট গ্রামের সোহরাব আলীর বাড়িতে যায়। এ সময় তারা বাড়িটি ঘিরে সোহরাবসহ তার পরিবারের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে সোহরাব বাড়ি থেকে বের হয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসামিরা ধাওয়া করে তাকে গুলি এবং কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী কহিনুর বেগম ওই দিন ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মোরেলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক মো. রেজাউল ইসলাম মামলার তদন্ত শেষে ওই বছর ১১ ডিসেম্বর ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানিকালে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামিদের বিরেুদ্ধে ওই দণ্ডাদেশ ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সীতা রাণী দেবনাথ। আসামি পক্ষে ছিলেন এ কে আজাদ ফিরোজ টিপু। রাইজিংবিডি/বাগেরহাট/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/আলী আকবর টুটুল/মুশফিক