সারা বাংলা

‘আমার প্রতিহিংসা নেই, সবার জন্য ভালোবাসা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সুস্থ হয়ে সিলেট ফিরেছেন জনপ্রিয় লেখক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। বুধবার দুপুর ১২টা ৪৫মিনিটে নভোএয়ারের একটি বিমানে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস তাকে স্বাগত জানান। পরে ভিআইপি লাউঞ্জে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তার ওপর হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। জনপ্রিয় এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘‘আইন কথা বলবে। আমাকে যেখানে আঘাত করা হয়েছিল, সেটা যদি দুই ইঞ্চি নিচে নামতো, তাহলে রগ কেটে যেত কিংবা বড় কিছু ঘটে যেত। আমি যেহেতু মৃত্যুর কাছাকাছি থেকে ফিরে এসেছি, তাই আমার ভিতরে প্রতিহিংসা নেই, সবার জন্য ভালোবাসা।’’ ছাত্র-ছাত্রী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা তার নিরাপত্তা- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘হামলাকারী ছেলেটি জেনেশুনে হামলা করেছে। মনে করেছে আমি হয়ত মারা যাব। তবে পুলিশের গাড়ি থাকায় দ্রুত আমাকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়েছে।’’ এ ঘটনা নিয়ে কারো বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ঢাকা থেকে ড. জাফর ইকবালের সঙ্গে তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক এবং এ দম্পতির মেয়ে ইয়েশিম ইকবালও সিলেটে আসেন। ব্রিফিং শেষে বিমানবন্দর থেকে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় তিনি সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশে রওয়ানা হন। বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসিক কোয়ার্টারে তার বাসায় গিয়ে পৌঁছেন বলে ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তারা তাকে বরণ করে নেবেন। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলবেন। এর আগে সকালে জাফর ইকবালের চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সামরিকবাহিনীর কর্মকর্তারা তাকে সিএমএইচে বিদায় জানান। তাকে আগামী সাত দিনের জন্য সম্পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত ৩ মার্চ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ট্রিপল-ই বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে জাফর ইকবালকে এক যুবক ছুরিকাঘাত করেন। ঘটনার পর জাফর ইকবালকে প্রথমে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। হামলার পর শিক্ষার্থীরা হামলাকারী ফয়জুর হাসানকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এ সময় গণপিটুনিতে তিনি গুরুতর আহত হন। তিনি এখন কারাগারে আছেন। 

   

রাইজিংবিডি/সিলেট/১৪ মার্চ ২০১৮/নোমান/বকুল