সারা বাংলা

আলিফ নিহতের খবরে শোকে স্তব্ধ পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় খুলনার আলিফুজ্জামান আলিফের ভাগ্যে কী ঘটেছে- সেটি জানতে পেরিয়ে গেছে দুই দিন। এ সময়টা তার পরিবারের সদস্যদের আশা-নিরাশার চোলাচলে কেটেছে। বুধবার মিডিয়ায় তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করায় শোকে পাথর হয়ে গেছে আলিফের পরিবার। আলিফের মায়ের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ হয়েছে। কথা বলতে পারছেন না তিনি। বাকরূদ্ধ হয়ে অসহায়ের মতো ছেলের পথের দিকে চেয়ে আছেন। আলিফুজ্জামানের বাবা মুক্তিযোদ্ধা মোল্লা আসাদুজ্জামান বিলাপ করে ‘বাবা তুমি কোথায় চলে গেলে, আল্লাহ আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দাও, আমি আর কিচ্ছু চাই না’ ইত্যাদি বলছেন। বুধবার সরেজমিন আলিফদের বাসায় গেলে এ সব দৃশ্য চোখে পড়ে। আলিফকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান তারা। কেঁদেই চলেছেন, আর আলিফের সঙ্গে বিভিন্ন স্মৃতির কথা আওড়াচ্ছেন। যতই সময় গড়িয়ে যাচ্ছে, ততই স্বজনদের ভিড় বাড়ছে। বাড়ছে মাতম। আলিফের বড় ভাই আশিকুর রহমান হামিম বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রতিবেদককে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল ৮টার ফ্লাইটে তার খালু শাহাবুর রহমান নেপালে গেছেন। তিনি সেখানে পৌঁছালেও তাকে কোনো কফিন দেখতে বা হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। যে কারণে তার খালুসহ বন্ধুরা সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না। মিডিয়ায় প্রকাশিত নিহতদের তালিকায় আলিফের নাম তারা দেখেছেন বলে জানান। আলিফের দুলাভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, ছয় মাস আগে আলিফের বড় ভাই বিয়ে করেছে। তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা করেন। আলিফকে বিয়ে দেওয়ার কথা চলছিল। ১২ মার্চ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত আরোহীদের মধ্যে আলিফ একজন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতি গ্রামে। খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন আলিফ। খুলনার বিএল কলেজ থেকে এবার মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। তিন ভাইয়ের মধ্যে আলিফুজ্জামান মেঝ। আলিফ রূপসার বেলফুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং খুলনার আহসান উল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০০৭ সালে তিনি কাজের সন্ধানে সৌদিতে যান। সেখান থেকে ২০১০ সালে ফিরে খুলনা সিটি কলেজে ভর্তি হয়ে ডিগ্রি পরীক্ষা দেন। সর্বশেষ তিনি খুলনার বিএল কলেজ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এখনো কয়েকটি পরীক্ষা বাকি রয়েছে। আলিফের বন্ধু জিয়াউল হক মিলন বলেন, পরীক্ষার মধ্যে ১০ দিনের গ্যাপ থাকায় সেই সময়ে নেপাল যাচ্ছিল আলিফ। ঘুরাঘুরি খুব পছন্দ ছিল তার। গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত গিয়েছিল। রাইজিংবিডি/খুলনা/১৪ মার্চ ২০১৮/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/বকুল