সারা বাংলা

ভ্যানের চাকার সাথেই ঘুরছে তার জীবনের চাকা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বয়স মাত্র ১২ বছর। এই বয়সেই উপার্জনে নেমে পড়েছে জাহিদ। ভ্যানে মানুষ কিংবা মালামাল নিয়ে ছুটছে প্রতিদিন। এই বয়সে লেখাপড়া ও বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটানোর কথা। মায়াভরা চেহারার জাহিদের সঙ্গে দেখা হলো কোটালীপাড়া সদরে। কৌতুহল থেকে তার সঙ্গে আলাপ করতেই বেরিয়ে এলো একটি পরিবারের দুর্দশার চিত্র। বাবা টিটু হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় সংসারের বোঝা এই বয়সেই কাঁধে চেপেছে জাহিদের। অ্যাজমাসহ জটিল রোগে আক্রান্ত বাবা কোন কাজ করতে পারেন না। ফলে সংসার, ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া আর বাবার চিকিৎসার খরচ যোগাতে বাধ্য হয়েই জাহিদকে ভ্যান চালিয়ে অর্থ রোজগার করতে হচ্ছে। এখন ভ্যানের চাকার সাথেই ঘুরছে তার জীবনের চাকা। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুরপালা গ্রামে ওদের বাড়ি। বাবা-মা আর দুই ভাই- এই চার সদস্যের পরিবার। ছোট ভাই ফেরদাউস তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। জাহিদ চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ভ্যান নিয়ে উপার্জনে নেমে পড়েছে। জাহিদ জানায়, তার বাবা টিটু হাওলাদার এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এ ভ্যানটি কিনেছে। দৈনিক যে আয় হয় তা দিয়ে ঋণের কিস্তি ও সংসার দুটো একসঙ্গে চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তার ওপর আবার ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ। বাবার চিকিৎসার দৈনন্দিন ওষুধপথ্য। আলাপকালেই নতুন খ্যাপে যাওয়ার জন্য যেতে ডাক পড়ে জাহিদের। নতুন খ্যাপে যেতে পা বাড়ায় সে। হয়তো এখানেই লেখাপড়ার ইতি ঘটবে জাহিদের। সংসারের বোঝা ছাপিয়ে আর কোন দিনই স্কুলে যাওয়া হবে না ওর। যদি কোন বিত্তবান পাশে দাঁড়ান, তবেই হয়তোবা বদলে যেতে পারে এই পথ। রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/১৯ মে ২০১৮/বাদল সাহা/টিপু/শাহনেওয়াজ