বাগেরহাট সংবাদদাতা: অবশেষে উদ্ধার হয়েছে সুন্দরবনের পশুর নদীর হারবারিয়া এলাকায় ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি বিলাস। উদ্ধারের পর জাহাজটিকে টাকবোট দিয়ে টেনে ১১ নেটিক্যাল মাইল দূরে মোংলার কানাইনগর বাইদ্দার চরে রাখা হয়েছে। ডু্বে যাওয়ার ৪৬দিন পর বুধবার জাহাজটিকে দুই টুকরো করে উদ্ধার করা হয়। এমভি বিলাসের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) লালন হাওলাদার বলেন, ‘জাহাজটি ডুবে যাওয়ার পর থেকে আমরা তোলার জন্য খুবই তৎপর ছিলাম। ২৪ এপ্রিল আমরা উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হোসেন স্যালভেস কোম্পানির সাথে জাহাজটিকে উদ্ধারের জন্য চুক্তি করি। এর পর থেকে প্রথমে জাহাজের কয়লা উত্তোলন করা হয়। কয়লা নওয়াপাড়ায় নিয়ে রেখেছি। হোসেন স্যালভেসের ২৪ জন এবং আমাদের (মালিক পক্ষের) ১২ জন ডুবুরির চেষ্টায় জাহাজটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।’ বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বাহারুল ইসলাম বাহারও জানালেন, কয়লা অপসারণ করে কার্গোটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. ওলিউল্লাহও জাহাজ এমভি বিলাস উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে উদ্ধারকারী জাহাজ ক্রয় জরুরি হয়ে পড়েছে। এ জন্য আমরা একটি প্রকল্প তৈরি করেছি। যতদ্রুত সম্ভব উদ্ধারকারী জাহাজ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’ সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জাহাজটি উদ্ধার না হওয়ায় সুন্দরবনের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করব।’ এ ব্যাপারে মোংলা পৌর মেয়র ও বন্দরের মাস্টার স্টিভিডরস জুলফিকার আলী বলেন- ‘মোংলা বন্দরে দেশি-বিদেশি জাহাজের আগমন বেড়েছে। সে কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়ে গেছে। কিন্তু খুলনায় বিআইডব্লিউটিএ কিংবা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্ধারকারী কোনো জলযান নেই। প্রয়োজন হলে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ নিয়ে আসা হয়। সে কারণে কোন জাহাজ এ এলাকায় ডুবলে উদ্ধার করতে দেরী হয়। ক্ষতির পরিমাণও বেড়ে যায়।’ উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল ভোরে ৭৭৫ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে জাহাজ এমভি বিলাস ডুবে যায়। এসময় জাহাজে থাকা নাবিকসহ ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। রাইজিংবিডি/বাগেরহাট/৩১ মে ২০১৮/আলী আকবর টুটুল/টিপু