সারা বাংলা

বিপুল গ্যাসের মজুদ সমৃদ্ধ ভোলার শিল্পোদ্যোক্তারাই গ্যাস বঞ্চিত

ভোলা সংবাদদাতা: বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মজুদ সমৃদ্ধ ভোলার শিল্প নগরী বিসিকের  শিল্পোদ্যোক্তারাই গ্যাস বঞ্চিত। অন্যদিকে চাহিদা মতো বিদ্যুতও পাচ্ছেন না তারা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে এখানকার অনেক শিল্পকারখানা। বিসিকে কোন সীমানা প্রাচীর না থাকায় একশ্রেণির প্রভাবশালীরা এ স্থানটিতে বালি পাথর রেখে ব্যক্তিগত ব্যবসাস্থলে পরিণত করেছেন। পড়ে থাকা ফাঁকা প্লটগুলোতে কেউবা গরু চরাচ্ছেন। এদের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে বিসিকের রাস্তাঘাট ভেঙ্গেচুরে পরিবেশের ক্ষতি করছে। কিন্তু বিসিকের কর্মকর্তারা ভয়ে মুখ খুলতেও পারছেন না। ভোলার খেয়াঘাট সড়কের চরনোয়াবাদ চৌমুহনী এলাকায় ১৪.৪৫ একর জমির উপর ১৯৯২ সালে ভোলার বিসিক শিল্পনগরীর উদ্বোধন হয়। বরাদ্ধের জন্য মোট ৯৩টি প্লট করা হয়। এর মধ্যে ৩৫টি শিল্প ইউনিট হিসাবে বরাদ্ধ হয়। বর্তমানে এর ২২টি প্লটই খালি পড়ে আছে। গ্যাস সংযোগ, চাহিদা মতো বিদ্যুতসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার আশায় প্রথম দিকে অনেকেই  বিসিকে শিল্প কারখানা গড়ে  তোলেন। কিন্তু গ্যাস পাওয়া তো দূরের কথা চাহিদামতো বিদ্যুতও পাচ্ছেন না  উদ্যোক্তারা। এদিকে প্লট বরাদ্দ নেওয়া হলেও চালু হয় মাত্র ৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান । কিন্তু বর্তমানে পিভিসি পাইপ এন্ড সরদার আয়রন টাইলস, জননী পেট্রো কেমিক্যাল, বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং, শাহাজালাল প্লাস্টিক, সেমাই প্রস্তুতকারক এ.এইচ এন্টার প্রাইজসহ ৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ৪টি শিল্পকারখানা। এতে করে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে যায়। বিসিকের একটি টাইলস ও পাইপ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান লাভের আশায় গড়ে উঠলেও গ্যাস না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন কারখানা মালিক। এতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করায় বহু টাকার বিল দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন এ মালিক, অপরদিকে উৎপাদনও কম হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভোলার শিল্পউদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে তাদেরকে দ্রুত  গ্যাস সংযোগ না দিলে শিল্পকারখানার প্রসার ঘটবে না। এ ব্যাপারে বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক কাজী তোফাজ্জল হক জানান, তাদের এখন সমস্যাই হচ্ছে।  বিসিকের কোন গ্যাসের লাইন নেই। গ্যাসের জন্য তারা সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে চাহিদাপত্র দিলেও এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। এ ব্যাপারে ভোলা জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম ছিদ্দিকী জানান, বিসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য তিনি মন্ত্রনালয়কে জানিয়েছেন। গ্যাস সংযোগ দেওয়া হলে ছোট বড় অনেক শিল্পকারখানা বিসিকে গড়ে উঠবে বলে ধারণা করছেন তিনি। এখানকার ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা মনে করছেন ভোলার বিসিকে সহজ পদ্ধতিতে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হলে দ্রুত ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় ধরনের শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠবে। এতে করে বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। রাইজিংবিডি/ভোলা /২৫ জুন ২০১৮/ ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন /টিপু