সারা বাংলা

নারীর উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেবার অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট: নির্বাচিত হলে নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাত মেয়র প্রার্থী। একই সাথে তারা দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি পরিহার করে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সংস্কৃতি চালু ও নির্বাচনের রায় মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।  বুধবার নগরীর রিকাবীবাজারস্থ মোহাম্মদ আলী জিমনেশিয়ামে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাত মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে ‘জনগণের মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে তারা এ অঙ্গীকার করেন। ‘অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই’-এ স্লোগানকে সামনে রেখে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সুজন সম্পাদক সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান (নৌকা), বিএনপি  মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী (ধানের শীষ), জামায়াত সমর্থিত নাগরিক ফোরামের প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (টেবিল ঘড়ি), বিএনপি বিদ্রোহী সম্মিলিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম (বাস গাড়ি), সিপিবি-বাসদের প্রার্থী কমরেড আবু জাফর (মই), ইসলামী আন্দোলনের ডা: মোয়াজ্জেম হোসেন খান (হাতপাখা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সিলেট কল্যাণ সংস্থার সভাপতি এহসানুল হক তাহের (হরিণ) উপস্থিত ছিলেন। সুজন সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুজন সিলেট কমিটির সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার। পরে লটারির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক প্রার্থী ৫ মিনিট করে জনগণের উদ্দেশ্যে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবং নিজেদের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রার্থীরা উপস্থিত নাগরিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন। পরে সাত প্রার্থী লিখিত অঙ্গীকার করেন করেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ সিলেটকে পর্যটন  ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নগরী, যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধে খেলাধুলার প্রচলন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং নগরীর সার্বিক উন্নয়নে তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘একজন মেয়রের কাজ কেবল রাস্তাঘাট-কালভার্ট নির্মাণ নয়, নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও তার কাজ। একজন মানুষ সকালে কাজে বের হয়ে রাতে যাতে নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারে, সেদিকটা নিশ্চিত করাও মেয়রের কাজ। আমি নির্বাচিত হলে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবো।’ নির্বাচনে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটের পবিত্র মাটির লোকজন নির্বাচনে যে কোন ধরণের কারচুপি রুখে দেবে। তিনি বলেন, ‘সিলেটের উন্নয়নের জন্য যা যা করার কথা ছিল, আমি তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কারণ, নির্বাচিত হওয়ার পর পরই আমাকে তিন বছর জেলে থাকতে হয়েছে। তারপরও আমি অনেক কাজ করেছি, যা দৃশ্যমান। এখন আমার স্বপ্ন, আধুনিক সিলেট মহানগর গড়ার।’ জামায়াত সমর্থিত নাগরিক ফোরামের প্রার্থী এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করার পাশাপাশি স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সন্ত্রাস-রাহাজানি ও মাদকমুক্ত নগরী গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘মেয়র নির্বাচিত হলে সিলেটকে আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তুলবো। এ ছাড়া, এ অঞ্চলের বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবো এবং স্বল্প আয়ের মানুষকে কাজে লাগিয়ে সিলেটকে আরও এগিয়ে নেবো।’ নির্বাচিত হলে সিলেটকে তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম। সিপিবি-বাসদের প্রার্থী নির্বাচিত স্বল্প আয়ের মানুষের শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ডে কেয়ার সেন্টার চালু করবেন বলে জানিয়েছেন। ইসলামী আন্দোলনের ডা: মোয়াজ্জেম হোসেন খান প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থায়ী মক্তব এবং মেটারনিটি ওয়ার্ড স্থাপনের বিষয়ে তার পরিকল্পনার কথা জানান। স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসানুল হক তাহের নির্বাচিত হলে যুবকদের কল্যাণে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে নগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যম কর্মী এবং সুজনের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

   

রাইজিংবিডি/সিলেট/ ১১ জুলাই ২০১৮/নোমান/শাহেদ