সারা বাংলা

রাগীব আলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে সাজা বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেটের আলোচিত শিল্পপতি রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের সাজা বহাল রেখেছেন সিলেট বিশেষ দায়রা জজ আদালত। একই সঙ্গে উচ্চ আদালতের জামিনে থাকায় আসামিদের আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সিলেটের তারাপুর চা বাগান লিজের ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলার আপিলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক আগের সাজা বহাল রাখেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও স্পেশাল পিপি নওশাদ আহমদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) চারটি ধারায় রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে তাদের চারটি ধারায় ১০ হাজার টাকা করে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার সকালে বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিম্ন আদালতের সাজা বহাল রাখেন জানান তিনি। আদালতে আসামি পক্ষে মামলার শুনানি করেন সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, এ টি এম মাসুদ ও মঈনুল ইসলাম। তারাপুর চা-বাগান পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। ১৯৯০ সালে ভুয়া সেবায়েত সাজিয়ে এ বাগান দখল করেন রাগীব আলী। ২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল কাদের বাদী হয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি এবং সরকারের এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি ওই দুটি মামলা পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দেন সুপ্রিমকোর্ট। পরে একই বছরের ১০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল এবং ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দিনই রাগীব আলী তার ছেলে আবদুল হাইকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। পরে ১২ নভেম্বর জকিগঞ্জ সীমান্তে গ্রেপ্তার হন আবদুল হাই। আর রাগীব আলী ২৩ নভেম্বর ভারতের করিমগঞ্জে গ্রেপ্তার হন। সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণশেষে ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিলেটের তৎকালীন মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো পাঁচটি ধারায় রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। একই বছরের ৬ এপ্রিল প্রতারণা করে তারাপুর চা বাগানের ভূমি আত্মসাতের মামলায় রাগীব আলী ও তার পরিবারের ৫ সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। পলাতক থেকে দৈনিক সিলেটের ডাক-প্রকাশের অভিযোগে ছেলেসহ রাগীব আলীর আরো এক বছরের কারাদণ্ড হয়। এ তিনটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন রাগীব আলী। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি জামিনে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। রাইজিংবিডি/সিলেট/০৯ আগস্ট ২০১৮/নোমান/বকুল