সারা বাংলা

ভেঙে পড়েছে কপোতাক্ষ’র বাঁশের সাঁকোটিও..

যশোর প্রতিনিধি: মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত’র জন্মস্থান সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদের দু’পাড়ের মানুষের পারাপার এখনো বাঁশের সাঁকোতেই। সম্প্রতি ভেঙে পড়েছে সেই সাঁকোটিও। ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কপোতাক্ষ’র দু’পাড়ের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত ও যোগাযোগ । বাঁশের সাঁকোটি নির্মিত হয়েছিল ২০১১ সালে সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির উদ্যোগে। সাগরদাঁড়ি বাজারের সাথে কলারোয়া ও তালা উপজেলার মানুষের যাতায়াতের জন্যে দু’পাড়ের মানুষের কাছ থেকে বাঁশ ও অর্থ সংগ্রহ করে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে কপোতাক্ষ নদের দু’পাড়ের শার্শা, সানতলা, কৃষ্ণনগর, পাঁচপাড়া, সেনেরগাতী, সরুলিয়া, ধানদিয়া, জয়নগর, সাগরদাঁড়ি, কোমরপোল, চিংড়া, বগা, নেহালপুর, মহাদেবপুর, রেজাকাটিসহ দু’পাড়ের প্রায় ৫০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের এই সাঁকো দিয়েই চলাচল। ব্যবসা-বাণিজ্য, বাজার সওদাসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে ওপারের মানুষ সাগরদাঁড়ি বাজারের উপরই নির্ভরশীল। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় এখন ওপারের মানুষই বেশি বিপদে। আর এ কারণে বাজারের ব্যবসা বাণিজ্যে ধস নেমেছে। প্রতিবছর সাগরদাঁড়িতে ২৫ জানুয়ারি থেকে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত’র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ সময় মানুষের ঢল নামে সাগরদাঁড়িতে। যার অধিকাংশ মানুষই যাতায়াতের জন্যে সাঁকোটি ব্যবহার করে থাকেন। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধুমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মধুকবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে মধুপল্লী ও পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে তা বাস্তবায়ন হলেও ব্রিজ নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যে কারণে দু‘পাড়ের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠে বাঁশের সাঁকোটি। দীর্ঘদিন বাঁশের সাঁকোটি সংস্কার না হওয়ায় সপ্তাহকাল আগে হঠাৎ ভেঙে পড়ে। ফলে সেই থেকে জনগণকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য সুভাষ চন্দ্র দে জানান, বাঁশ ও অর্থ সংগ্রহ করে প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার কারণে দু‘পাড়ের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বাজারে ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে পর্যটকসহ শত শত মানুষের আগমণ ঘটে সাগরদাঁড়িতে। তাই জরুরী ভিত্তিতে সাঁকোটি নির্মাণ প্রয়োজন । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানূর রহমান বলেন, ‘সাঁকোটি স্থানীয় জনগণ নির্মাণ করেছিলেন। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় মানুষের চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দ্রুত সাঁকোটি মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

       

রাইজিংবিডি/যশোর/১৩ আগস্ট ২০১৮/বি এম ফারুক/টিপু