সারা বাংলা

দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে

রাইজিংবিডি ডেস্ক : সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আজ মঙ্গলবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি জেলার বিভিন্ন গ্রামে ঈদ ‍উদযাপন ও পশু কোরবানি করতে দেখা গেছে। চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদ রাইজিংবিডির চট্টগ্রামের নিজস্ব প্রতিবেদক রেজাউল করিম জানান, চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামে আজ মঙ্গলবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। জেলার সাতকানিয়া উপজেলার মির্জারখীল দরবার শরিফের পীরের প্রবর্তিত রীতিতে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে প্রতিবছর এসব গ্রামে একদিন আগেই ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মির্জারখীল দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা শাহ জাঁহাগীর হজরত শেখুল আরেফীন প্রায় দুইশ বছর পূর্বে এই রীতি প্রচলন করেন। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে তার মুরিদরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে একদিন আগে তারাবির নামাজ আদায়, রোজা পালন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাসহ যাবতীয় ধর্মীয় দিবস পালন করে আসছেন। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় চন্দনাইশের মমতাজিয়া দরবারের সাজ্জাদানশীন আল্লামা শাহ্সুফি সৈয়্যদ মোহাম্মদ আলীর ইমামতিতে ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঈদের নামজের মাধ্যমে ঈদ উদযাপন ও পশু কোরবানি দেওয়া শুরু হয়। দরবার শরীফের বর্তমান পীর শাহ জাঁহাগীর হজরত তাজুল আরেফীনের বড় ছেলে ড. হজরত মাওলানা মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান বলেন, ‘সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে সাতকানিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামে আজ কোরাববানির ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। এসব গ্রামে পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২ হাজারেরও বেশি।’ দরবার শরিফ সূত্র মতে, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, চরতি, সুইপুরা, বাজালিয়া, মনেয়াবাদ, পুরানগড়, গাটিয়াডেঙ্গা, মার্দাশা, রূপনগর, আলীনগর, সাতকানিয়া সদর, চন্দনাইশের বরকল, কেশুয়া, চর বরমা, হাশিমপুর, দোহাজারী, হাছনদণ্ডী, বাইনজুরি, কানাইমাদারি, সাতবাড়িয়া, চন্দনাইশ সদর, কাঞ্চননগর, পূর্ব হারালা, বাঁশখালীর পুঁইছড়ি, চাম্বল, ডোংরা, কালিপুর, শেখেরখীল, ছনুয়া, ভাদালিয়া, বড়ঘোনা, লোহাগাড়ার চুনতি, আধুনগর, চাকফিরানী, আমিরাবাদ, পুঁটিবিলা, কলাউজান, বড়হাতিয়া, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, খাসহামা, কাটাখালী, বোয়ালখালী ও পুটিয়ার কয়েকটি গ্রামসহ দক্ষিণের অর্ধশতাধিক গ্রামের দরবারের মুরিদরা ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন। যেসব এলাকায় মির্জাখীল দরবার শরিফের অধিক সংখ্যক মুরিদ রয়েছেন সেসব এলাকায় পৃথকভাবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর যেখানে মুরিদ সংখ্যা কম তারা মির্জাখীল দরবার শরিফ এলাকায় গিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। লক্ষ্মীপুরে ১০টি গ্রামে আগাম ঈদ রাইজিংবিডির লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা ফরহাদ হোসেন জানান, সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে লক্ষ্মীপুরে ১০টি গ্রামে আজ মঙ্গলবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, বারো ঘরিয়া, হোটাটিয়া, শরশোই, কাঞ্চনপুর ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপা ও সদর উপজেলার বশিকপুরসহ ১০টি গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লি আজ ঈদ উদযাপন করছেন। সকাল ৭টায় খানকায়ে মাদানিয়া কাসেমিয়া রামগঞ্জ উপজেলা শাখার ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. মনিরুল ইসলাম মজুমদার।

 

১০টি গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লি পৃথক পৃথকভাবে স্ব স্ব ঈদগাঁ মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ পরবর্তী তারা বিশ্ব মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন। এরপর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন। মাওলানা ইসহাক (রা.) অনুসারী এসব গ্রামের মুসল্লিরা গত ৩৮ বছর যাবত সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছে। সাতক্ষীরার তিন উপজেলায় ঈদ রাইজিংবিডির সাতক্ষীরা সংবাদদাতা শাহীন গোলদার জানান, সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে সাতক্ষীরার তিন উপজেলার তিনটি স্থানে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাওকোলা পুর্ব-পাড়া জামে মসজিদে মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাতানি, ভাদড়া, বাওকোলা, মৃগিডাঙ্গা, মল্লিকপাড়া, ভাড়–খালি, মাহমুদপুর এবং তালা উপজেলার ইসলামকাটি ও সুজনশাহা গ্রামের শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন। এ ছাড়া সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর ও কালীগঞ্জে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। জেলার এই তিনটি স্থানের ঈদের জামায়াতে প্রায় ২ শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন। মাওলানা মহব্বত আলী জানান, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে ঈদ উদযাপন করা যায়। এ ছাড়া, নোয়াখালী, বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাটসহ আরো কয়েকটি জেলার কয়েকটি গ্রামে আজ ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ আগস্ট ২০১৮/সাইফুল