সারা বাংলা

যেভাবে অবতরণ করল ইউএস বাংলার বিমান

রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম : ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর দুপুর ১টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল ইউএস বাংলার ফ্লাইট বিএস ১৪১-এর। যথারীতি কক্সবাজারের আকাশে গিয়ে অবতরণের প্রস্তুতি নেন পাইলট। তখন পাইলটের দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন জাকারিয়া। কিছুক্ষণের মধ্যে বিমান কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করছে- এমন ঘোষণা দেওয়া হয় যাত্রীদের। কিন্তু ল্যান্ডিংয়ের জন্য ল্যান্ডিং গিয়ার একটিভ করতেই পাইলট সঙ্কেত পান বিমানের পেছনের চাকা খুললেও সামনের চাকা খুলছে না। পাইলট বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও সামনের চাকা ওপেন করতে ব্যর্থ হন। ইউএস বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম জানান, এরপর পাইলট কক্সবাজারের পরিবর্তে চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সামনের চাকা ছাড়াই বিমান জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। এই জরুরি বার্তা দেওয়া হয় বিমানবন্দরে। বার্তা পেয়ে দ্রুততার সঙ্গে রানওয়ে ফাঁকা করা হয়। তলব করা হয় ফায়ার সার্ভিসকে। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস বিভাগের চারটি ইউনিটের ছয়টি গাড়ি, বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি উদ্ধারকারী দল দ্রুত প্রস্তুতি নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ইউএস বাংলার ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের প্রস্তুতি নেয়। বিমান জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হচ্ছে- এই বার্তা জানানো হয় যাত্রীদের। তবে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি বলে আশ্বস্ত করা হয় বিমানের ককপিট থেকে। চট্টগ্রামের আকাশে এসে বেশ কয়েকবার বিমানের সামনের চাকা খোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন পাইলট।  দুপুর সোয়া ১টার দিকে পাইলট ক্যাপ্টেন জাকারিয়া অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে শুধু চারটি চাকার ওপর ভর করে বিমানটি রানওয়েতে নামিয়ে নিয়ে আসেন। বিমান নামার সময় দূর থেকে দেখা যায়, পেছনের চাকার ওপর ভর করে রানওয়েতে বেশ কিছু দূরে গিয়ে কিছুটা গতি কমে যায়। এরপর সামনের অংশ (নোজ) রানওয়েতে ঘর্ষণে আগুনের ফুলকি বের হয় এবং ধোঁয়া বের হতে থাকে। কিছুদূর গিয়ে বিমানটি থেমে যায়। ফায়ার সার্ভিস এবং উদ্ধারকারী দল দ্রুত বিমানটি ঘিরে ফেলে। বিমানের সামনের যে অংশে আগুনের ফুলকি ও ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল, সেখানে পানি ছিটিয়ে নিভিয়ে ফেলা হয়। পরে বিমানের পেছনের দুটি জরুরি নির্গমন দরজা খুলে গেলে যাত্রীরা নিরাপদে নেমে আসতে সক্ষম হন। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস বিভাগের উপ-সককারী পরিচালক জসিম উদ্দিন রাইজিংবিডিকে জানান, তারা দুর্ঘটনা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। পাইলট দক্ষতার সঙ্গে পেছনের চাকার ওপর ভর করে বিমান নিরাপদে অবতরণ করাতে সক্ষম হয়েছেন। এই ধরনের ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে বিমানে আগুন ধরার আশঙ্কা থাকে। রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮/রেজাউল/বকুল