সারা বাংলা

পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কলারোয়ার কৃষকদের

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় জলাবদ্ধ পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পানি ফলের চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানের স্থানীয় ভাষায় বলা হয় পানি সিংড়া। স্থানীয়রা জানান, ফলটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। কম খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় কলারোয়ায় এই মৌসুমী পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। তাদের দাবি, গত চার বছর আগে উপজেলায় পরিচিতি পাওয়া পানিফল গত বছরের ন্যায় চলতি বছরও জেলার গন্ডি পেরিয়ে ঢাকা, যশোর, মাগুরা, বরিশাল, ঝিনাইদহ, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে বিক্রি হবে এখানকার পানি সিংড়া। ইতিমধ্যে পাইকারি ব্যবসায়ীরা যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে এসব কৃষকরা জানান। কলারোয়া উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ গাজী, ঝিকরা গ্রামের গোলাম মোস্তফাসহ কয়েকজন চাষি জানান, প্রতিবছর এলাকায় জলাবদ্ধ জমি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার কারণে পতিত জমিতে বিকল্প হিসেবে তারা পানিফল চাষ করছেন। তারা আরও জানান- সাতক্ষীরা সদর, কালীগঞ্জ এলাকায় ৮-৯ বছর আগেই এই ফলের চাষ শুরু হলেও কলারোয়ায় চার বছর আগে গোপিনাথপুর গ্রামের আজিবর নামে এক কৃষক কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে বীজ এনে পানিফলের চাষ করে লাভবান হন। সেসময় থেকে এলাকায় এটি ‘পানি সিংড়া’ নামে পরিচিতি পায়। এরপর থেকে জলাবদ্ধ পতিত জমিতে কৃষকরা বানিজ্যিকভাবে পানিফল চাষ শুরু করে। সরজমিনে দেখা গেছে, গোপিনাথপুর, তেলকাড়া, গোয়ালচাতর, কুশোডাঙ্গা, মুরারিকাঠি, লোহাকুড়া গ্রামসহ কয়েকটি এলাকার জলাবদ্ধ জমিতে পানিফলের চাষ করা হয়েছে। কথা হয় মুরারিকাঠি এলাকার চাষি রেজাউল, লাভলু, রোহাকুড়া গ্রামের তোহিদুর রহমান ও ওসমান গনির সাথে। এসব পানিফল চাষিরা জানালেন- এখন পরিচর্যার কাজ চলছে, আর কয়েক দিনের মধ্যে ফল আসতে শুরু করবে। কার্তিক মাসের শেষে এই ফল বিক্রি শুরু হবে। মূলত, কচুরিপানার মত পানিতে ভেসে থাকা গাছে গাছে কিছুটা লাল-সবুজ বর্ণের ফলটির নাম পানিফল। দুইপাশে শিং আকারে থাকায় স্থানীয়ভাবে ‘পানি সিংড়া’ নামে পরিচিত। তারা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার পানিফল বিক্রি হয়। কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.মহাসীন আলী বলেন, ‘কলারোয়া উপজেলায় মৌসুমী পানিফল চাষে স্থানীয় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এরফলে একদিকে জলাবদ্ধ পতিত জমির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে অপরদিকে কৃষকরা কিছুটা হলেও লাভবান হচ্ছে।’ চলতি বছর উপজেলায় প্রায় ১শ’ বিঘারও বেশি জমিতে পানিফলের চাষ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/২১ অক্টোবর ২০১৮/এম.শাহীন গোলদার/টিপু