সারা বাংলা

পয়লা অগ্রহায়ণ : উত্তরের জনপদে নবান্নের ম ম ঘ্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর: আজ পহেলা অগ্রহায়ণ।  শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা-মাড়াই। উত্তরের জনপদে কৃষকদের ঘরে ঘরে নবান্নের ম ম ঘ্রাণ। উত্তরাঞ্চলে এখন আমন ধান কাটা-মাড়াই চলছে পুরোদমে। বাজারে ধানের দাম ভালো এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই ভালভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারায় কৃষকরা বেজায় খুশি। অনেকেই গ্রাম বাংলার পুরনো ঐতিহ্য মেনে উৎসব আমেজে নবান্ন’র স্বাদ নিচ্ছেন। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বাবুপাড়া গ্রামের অনন্ত চন্দ্র রায় ৭ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৩ বিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। পয়লা অগ্রহায়ণে তিনি নবান্ন  করবেন। এ উপলক্ষে তিনি আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবকে নিমন্ত্রণ করেছেন। তিনি জানান, বাড়ির কর্তা হিসেবে তিনি ২ দিন আগে সকাল বেলা স্নান সেরে পবিত্র হয়ে বাম হাত দিয়ে এক মুঠি ধান কর্তন করে নবান্নের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছেন। কাউনিয়া উপজেলার বেলাল ও মাহাবুব ৪ দিন আগে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান করে ধান গোলায় তুলেছে। তারাও নবান্নের অনুষ্ঠান করেছেন। এভাবেই এ অঞ্চলের কৃষকরা নবান্নের মাধ্যমে আমন ফসল ঘরে তুলছে। যারা এখনো কাটা মাড়াই করতে পারেনি তারাও তোড়জোর শুরু করেছেন। দু-চারদিনের মধ্যে তারা ধান কাটা শুরু করবে। রংপুর সদর উপজেলার আমন চাষি অমিনুর রহমান ২ একর জমিতে আমন আবাদ করেছেন। তার ধান এ পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৩০ শতাংশ। পায়রাবন্দের লতিফ মিয়া দু’একর জমিতে আবাদ করেছেন তিনি এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ ধান ঘরে তুলেছেন। এ ছাড়া হারুন উর রশিদ, মিয়া তালেব, আমিনুল, কাউনিয়ার আফজাল, মঞ্জু, পীরগাছার বুলবুল, মাহাবুব, সদরের রাজুসহ উত্তরাঞ্চলের লাখো আমন চাষির চোখে মুখে এখন খুশির ঝিলিক বয়ে যাচ্ছে। তারা সকলেই নবান্নের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ধান কাটার প্রস্তুতি নিয়েছেন। নবান্ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি প্রাচীন প্রথা হলেও এ অঞ্চলে কৃষকদের কাছে এখনো সমাদৃত। এটি এখন বাঙালীর একটি চিরায়ত উৎসবে পরিনত হয়েছে।  কৃষক ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নবান্ন উৎসব নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালন করে থাকেন। রংপুর ও রাজশাহীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উত্তরের ১৬ জেলায় প্রায় ১৮ লাখ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাইজিংবিডি/রংপুর/১৫ নভেম্বর ২০১৮/নজরুল মৃধা/টিপু