সারা বাংলা

বুড়িগঙ্গায় পাওয়া লাশ বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার লাশ যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবু বক্কর আবুর। তার ভাগ্নে আশিকুজ্জামান লাশ শনাক্ত করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ১২ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিতে আবু ঢাকা গিয়েছিলেন। ঢাকার বিজয়নগর এলাকার একটি হোটেলের সামনে থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেলিঘাট আশ্মিনগেট এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়।  ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পক্ষ থেকে আজ ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে নৌকার ওপর শোয়ানো মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির লাশ দেখা যায়। পোস্টে লেখা হয়, ‘‘অজ্ঞাতনামা মুসলিম পুরুষ, বয়স অনুমান ৫০ বছর- এর মৃতদেহ বুড়িগঙ্গা নদীতে পাওয়া গিয়াছে। পরনে সাদা পাজামা, সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি।’’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ছবি অনেকের দৃষ্টিতে আসে। বিএনপি নেতা-কর্মীরা সন্দেহ করতে থাকেন- গত ১৮ নভেম্বর রাজধানী থেকে নিখোঁজ যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও কেশবপুরের মজিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর আবুর লাশ এটি। সন্ধ্যা নাগাদ এই খবর কেশবপুর, যশোর ও ঢাকায় ছড়িয়ে পড়ে। যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ১৮ বা ১৯ নভেম্বর আবু বক্কর আবু নিখোঁজ হন। বুধবার সন্ধ্যায় বুড়িগঙ্গায় পাওয়া লাশটি তার। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘‘যতদূর মনে হচ্ছে, এটি আবু চাচার লাশ।’’  রাত ৯টার দিকে কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ ও অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আবু ভাইয়ের এইভাবে মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। এটা দলের জন্য বিরাট ক্ষতি। আবু বক্কর আবু যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় ঢাকা গিয়েছিলেন বলে নিশ্চিত করেন অমিত। রাত ৯টার কিছু সময় পর ভাগ্নে আশিকুজ্জামান যশোরের সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন, লাশটি আবু বক্কর আবুর। পরনের পোশাক দেখে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানান। এই খবর ইতিমধ্যে তিনি কেশবপুরে আত্মীয়-স্বজনদের জানিয়েছেন। আবু বক্কর আবু যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি টানা ২০-২২ বছর কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চিরকুমার আবু ছিলেন তার এলাকায় ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়। মজিদপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানও তিনি। এর আগেও তিনি ওই ইউনিয়নে তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপি নেতা অমিত জানান, যেদিন খুলনা বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের নির্ধারিত দিন ছিল, তার আগের দিন সন্ধ্যায় বিজয়নগরের একটি আবাসিক হোটেলের নিচ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আবু বক্কর আবুকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে মনোনয়ন বোর্ড শুরু হওয়ার আগে বিএনপি মহাসচিব উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় বিষয়টি তুলে ধরেন। এ ছাড়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের যে চিত্র নির্বাচন কমিশনে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে, সেখানে আবু বক্কর আবুর অপহরণের বিষয়টি ছিল। রাইজিংবিডি/যশোর/২২ নভেম্বর ২০১৮/বিএম ফারুক/বকুল