সারা বাংলা

আগুন পোহাতে গিয়ে দুজনের মৃত্যু, দগ্ধ ১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : উত্তরাঞ্চলে প্রচণ্ড শীতের কারণে আগুন পোহাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। কেউ কেউ মারা যাচ্ছে। গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৩ দিনে আগুনে দগ্ধ এরকম দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে যে দুজন মারা গেছেন তারা হলেন- লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার রাজিয়া বেগম (২৭) এবং একই জেলার আদিতমারী উপজেলার মোমেনা বেগম (৩২)। বর্তমানে হাসপাতালে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন কমপক্ষে আরো ১২ জন। এদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। গুরুতর একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রংপুর অঞ্চলে গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ৫ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন তারা। বিশেষ করে আগুন পোহানোর সময় অসাবধানতাবশত শাড়ির আঁচলে কিংবা কাপড়ে আগুন ধরে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হচ্ছেন নারী ও শিশুরা। দগ্ধ নারী ও শিশুদের আহাজারি আর স্বজনদের কান্নায় বার্ন ইউনিটে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে বার্ন ইউনিটে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন কুড়িগ্রামের  নাগেশ্বরী এলাকার অগ্নিদগ্ধ লাবন্য বেগম জানান, তীব্র শীতের হাত থেকে বাঁচতে ধানের খড় দিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে তার পড়নের কাপড়ের পেছনে আগুন লেগে যায়। এতে করে তার কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত ঝলসে যায়। প্রায় একই ধরণের কথা জানালেন রংপুরের মমিনপুর গ্রামের এলাকার জরিনা বেগম। রমেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক  ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, বার্ন ইউনিটে বেড রয়েছে ২ টি। কিন্তু বর্তমানে এখানে ৫০ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন রোগী আসছে। এদের অনেককে অন্য ওয়ার্ডে রেফার্ড করে  চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, গত বছর শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে কমপক্ষে ১৬ জন মারা গিয়েছে। এছাড়া দগ্ধ হয়েছিল কমপক্ষে ৫০ জন। এবারো ওই ধরনের অগ্নিদগ্ধ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অসাবধানতা থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। রাইজিংবিডি/রংপুর/৫ জানুয়ারি ২০১৯/নজরুল মৃধা/টিপু