সারা বাংলা

শফীর বক্তব্য তার ব্যক্তিগত : শিক্ষা উপমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পড়ানোর আহ্বানকে ‘হেফাজত আমীরের’ ব্যক্তিগত অভিমত বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, ‘‘এই বক্তব্য একান্তই ‘হেফাজত আমীরের’ ব্যক্তিগত অভিমত। এই বক্তব্য রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’’ শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর চশমা হিলের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী এই প্রতিক্রিয়া জানান। শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিলে মাদ্রাসার পরিচালক হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শফী মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পড়ানোর আহ্বান জানান। শফীর দেওয়া এই বক্তব্য ও ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনা শুরু হয়। হেফাজতে আমীরের নাম উল্লেখ না করে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘‘যিনি এই মন্তব্যটা করেছেন, তিনি তার ব্যক্তিগত অভিমত দিয়েছেন। বাংলাদেশের শিক্ষানীতি প্রণয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনা অথবা শিক্ষাখাতে নির্বাহী দায়িত্বে তিনি নেই। যেহেতু তিনি কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অবস্থানে নেই, তিনি অভিমত দিলেই সেটা রাষ্ট্রীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত বা প্রতিফলিত হবে, এমন চিন্তা করবার অবকাশ নেই। সমাজে এরকম অনেকেই অনেক ধরনের অভিমত দেন।’’ নওফেল বলেন, ‘‘পাঠ্যপুস্তককে সাম্প্রদায়িকীকরণ বা বিভাজন সৃষ্টি করা, কোমলমতিদের মানসিকতায় এসব বিভাজন দিয়ে দেওয়া, দীর্ঘমেয়াদে সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে। পড়াশোনা যদি সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যত নয়, নিকট ভবিষ্যতও আমাদের জন্য বিপদজনক হয়ে পড়বে।’’ পিইসি-জেএসসি পরীক্ষার আদৌ প্রয়োজন আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিইসি পরীক্ষা একটা পাবলিক পরীক্ষায় পরিণত হয়ে গেছে। এখন এটা কিভাবে নিরসন করা যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে প্রাইমারি স্কুল লেভেলের একটা সার্টিফিকেটেরও প্রয়োজন আছে। চট্টগ্রাম মহানগরীতে নতুন সরকারি স্কুল স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারা বলছে, জায়গা সংকটের কারণে নতুন করে সরকারি স্কুল স্থাপন করা প্রায় অসম্ভব। তার চেয়ে নগরীর নামিদামি স্কুলগুলো সরকারিকরণ করা ভালো হবে বলে ফিল্ড লেভেল থেকে অভিমত এসেছে।’’ মতবিনিময় সভায় নওফেলের সঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমউদ্দিন শ্যামল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার উপস্থিত ছিলেন। রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১২ জানুয়ারি ২০১৯/রেজাউল/বকুল