সারা বাংলা

পিকআপ চাপায় পা হারানো নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : মেফতাহুল জান্নাত নিপা। ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। এক পা হারিয়ে হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতর। স্কুলের সামনে পিকআপ চাপায় এই করুণ পরিণতি হয়েছে তার। দুর্ঘটনার দিন চিকিৎসকরা একটি পা কেটে ফেললেও অপর পা ও একটি হাত ভেঙে গেছে। সেখানে অপারেশন করা হয়েছে। দুর্বিসহ যন্ত্রণা তাকে স্বস্তি দিচ্ছে না। যন্ত্রণায় আত্মনাদ করছে যশোর জেনারেল হাসপাতালে। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় হাসপাতালে খবর পৌঁছায় নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। বৃত্তির সুখবরও তাকে আন্দোলিত করেনি। মেয়ের এমন সাফল্যেও বাবা মায়ের মন ভালো হয়নি। মেয়ের ভবিষৎ নিয়ে তারা শংকিত। গত ২০ মার্চ যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের শার্শা উপজেলার বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে পিকআপ চাপায় গুরুতর আহত হয় ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মেফতাহুল জান্নাত নিপা। সে শার্শা উপজেলার দক্ষিণ বুরুজবাগান এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। ২০১৮ সালে সবুজকুঁড়ি প্রি-ক্যাডেট থেকে প্রাথমিক সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ৬০০ এর মধ্যে তার মোট নম্বর ৫৬৯। রোববার প্রকাশিত ফলাফলে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে নিপা। নিপার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চলে এসেছিলাম। মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করব। ও ডাক্তার হবে। আমি নিজেই ওকে পড়াই। প্রাথমিক সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আজ (রোববার) বৃত্তির ফল প্রকাশ হয়েছে। নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খবর পেয়েছি। মেয়ের সাফল্যে আনন্দিত হওয়ার কথা। কিন্তু মোটেও আনন্দিত হতে পারিনি। মেয়ের হাত ও পায়ে আজ অপারেশন হয়েছে। খুব যন্ত্রণা করছে। ওর আর্তনাদে আমরাও কষ্ট পাচ্ছি।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে কি না জানি না। এক পা হারিয়েছে। কীভাবে লেখাপড়া করাব বুঝতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা চাই মেয়ের স্বপ্ন পূরণে। আমার মেয়ের মতো যেন আর কেউ দুর্ঘটনার শিকার না হয়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’ সবুজকুঁড়ি প্রি-ক্যাডেটের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘‘নিপা মেধাবী ছাত্রী। সে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। কষ্টের মধ্যেও সুখবর পেয়েছি আমরা। একটি দুর্ঘটনা তার জীবনে অন্ধকার বয়ে এনেছে।’’

 

 

রাইজিংবিডি/যশোর/২৫ মার্চ ২০১৯/বি এম ফারুক/বকুল