সারা বাংলা

সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লীতে ঈদ উত্তাপ

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা: ঈদকে সামনে রেখে শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, বেলকুচি, কামারখন্দ, চৌহালী, এনায়েতপুরের তাঁত কারখানাগুলোতে এখন বিরামহীন কাজ চলছে। তাঁতীরা সারা বছর তাঁতবস্ত্র উৎপাদন সচল রাখতে গিয়ে যে ঋণের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েন, ঈদ মৌসুমের উৎপাদন দিয়ে সারা বছরের লোকসান পুষিয়ে নেন। এ জন্য এ সময় তারা অতি ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেন। সিরাজগঞ্জে তাঁত কারখানায় সচল তাঁতের মধ্যে পিটলুম, হ্যান্ডলুম ও পাওয়ার লুম রয়েছে। এসব তাঁত কারখানায় সম্পৃক্ত থেকে প্রায় আড়াই লাখ তাঁত শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করছে। এর মধ্যে লক্ষাধিক শ্রমিক সরাসরি তাঁত বুননে জড়িত। বাকিরা সুতা রঙ, ডিজাইন তৈরি, সুতা পারি, চরকায় সুতা কাটা, সানা বয়া তৈরি, কাপড় ভাঁজ, লেবেলিং, মোড়কজাত করণ, হাটবাজারে কাপড় পৌঁছে দেওয়া, কাপড় বিক্রিসহ সহ নানা কাজে অতি ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঈদ উপলক্ষে এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে তাঁতপল্লীতে এতটাই ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে যে, নাওয়া খাওয়ার সময়ও ভুলে যাচ্ছে তারা। গভীর রাত জেগে কাজ করতে হচ্ছে। এ কাজে শিশুরাও কাজ করে বড়দের সহযোগীতা করছে। তবে প্রাপ্ত মজুরি নিয়ে অনেক তাঁত শ্রমিকই নাখোশ। তাঁত শ্রমিক রহিম শেখ জানান, পরিশ্রম অনুযায়ী তারা মজুরি পাচ্ছেন না। তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে সপ্তাহে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পান। বাজারে কাপড়ের দাম বাড়লেও তাদের মজুরি বাড়েনি। আগের তুলনায় কাপড় তৈরিতে সময় এবং পরিশ্রম বেশি হলেও মালিক নামমাত্র মজুরি বাড়িয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে পরিবারের চাহিদা মেটাতে বাড়তি রোজগারের আশায় তারা রাতদিন কাজ করছেন বলে জানান। তাঁতীরা জানান, এ বছর তাঁতের কাজ অনেকাংশে কমে গেছে। এ শিল্পের কাঁচা মালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থের যোগান দিতে না পেরে অনেক তাঁত মালিকের কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে তাঁত মালিকদের লোকসানের পাশাপাশি তাঁত শ্রমিকদের উপার্জন কমে গেছে। তারপরও সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী অঞ্চলে পা রাখলেই এখন শুনতে পাওয়া যাবে অবিরাম তাঁত বুননের খটখট আওয়াজ। রাইজিংবিডি/ সিরাজগঞ্জ/২৮ মে ২০১৯/অদিত্য রাসেল/টিপু