সারা বাংলা

কুমিল্লার দুঃখ ‘১১ কিলো’

কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কুমিল্লা শহর- এই ১১ কিলোমিটার পথেরই অত্যন্ত বেহাল দশা। অথচ এই জায়গাটুকুতেই কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলোর অবস্থান।

এই ১১ কিলোমিটারে রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, শালবন বিহার, ময়নামতি যাদুঘর, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), কুটিলা মুড়া, রুপবান মুড়া, নব শালবন বিহার, ব্লু ওয়াটার পার্ক, ডাইনো পার্ক, ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কসহ বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক নিদর্শন ও বিনোদন পার্ক।

রয়েছে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে বোর্ড কলেজ, বর্ডার গার্ড স্কুল এন্ড কলেজ, ল্যাবরেটরি স্কুল, সি সি এন পলিটেকনিক, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

অথচ ১১ কিলোমিটারে চলাচলের দুটি সড়কেরই অত্যন্ত বিবর্ণ দশা। এই স্থানে আসতে-যেতে পোহাতে হয় অবর্ননীয় দুর্ভোগ। বিশেষ করে এখানে আসা দর্শনার্থীদের কষ্টের সীমা থাকেনা।

দেখা যায়, কুমিল্লা কোটবাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়কের ৩০টি অংশে সৃষ্টি হয়ে আছে বড় বড় গর্ত। চলাচলের অযোগ্য হয়ে আছে সড়কটি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেলতলী বিশ্বরোড থেকে জাদুঘর ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তাটিরও একই অবস্থা। এতে করে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী, পর্যটক, দর্শনার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা। অথচ জেলা প্রশাসন যেন ঘুমিয়ে।

মাঝারি ও ছোট বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। এ ছাড়া ৩০টিরও বেশি বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে পলিটেকনিক থেকে ক্যাডেট কলেজ, নব শালবন প্রবেশ পথ থেকে জাদুঘর পর্যন্ত সড়কটিতে।

এ সড়কের চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বড় গর্তগুলো অতিক্রম করতে গিয়ে প্রায়শই উল্টে পড়ে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তির অন্ত নেই।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং শালবন বৌদ্ধবিহারে আসা পর্যটকরা রাস্তার বেহাল দশার জন্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সড়কের যে বেহাল দশা তা বর্ণনা করা কঠিন।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘সড়ক খারাপ হওয়ায় কুমিল্লা শালবন বৌদ্ধবিহার ও ময়নামতি জাদুঘরসহ দর্শনীয় স্থানগুলোর পর্যটক কমছে। চলতি অর্থবছরে শালবন বৌদ্ধবিহার ও ময়নামতি জাদুঘরের দেড় কোটি টাকা রাজস্ব অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৫০ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে সরকার।’

তিনি জানান, এ এলাকাটি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৪নং ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে।এ সড়কটি সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশন ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের বরাবর আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীরকে এই বিষয়ে জানানো হলে তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন, 'অচিরেই সড়কটি সংস্কার করা হবে।'

অপরদিকে কুমিল্লা শহর থেকে কোটবাড়ীতে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক রামমালা সড়কেরও বেহাল দশা। এখানেও বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। এ সড়কেও ভোগান্তির সীমানা নেই।

এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, 'কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে শালবন পর্যন্ত সড়কটি টেন্ডার হয়ে গেছে।' জুন মাসের শেষের দিকে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

   

রাইজিংবিডি/কুমিল্লা প্রতিনিধি/২৯ জুন ২০১৯/ জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল/টিপু