সারা বাংলা

কাজে আসছেনা জাইকার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

কুমিল্লা প্রতিনিধি: কাজে আসছেনা জাইকার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, ঘন্টা খানেকের বৃষ্টিতেই পানিবন্দি হয়ে পড়ছে কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দারা।

কেবল এবারই নয়, অন্তত দুই দশক ধরেই কুমিল্লা শহরের নাগরিকরা এই জলাবদ্ধতার শিকার। এটি কুমিল্লা শহরের বহু পুরনো সমস্যা।         

বলা যায়, চলতি বর্ষা মৌসুমে নগর জুড়ে চলমান নালা সংস্কার কাজের দরুণ এ সমস্যাটি আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। নগরীর উন্নয়নে দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে অপরিকল্পিত ভাবে চলছে কুমিল্লা সিটির এই নালা ও ফুটপাতের সংস্কার কাজ। ফলে খানিকটা বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। শুরু হয় নাগরিকদের চরম দুর্ভোগ।      

দেখা যায়, শনিবার সন্ধ্যা ও রোববার দুপুরের বৃষ্টিতে নগরীর প্রাণ কেন্দ্র কান্দিরপাড় পানিতে তলিয়ে যায়। সেই সাথে ডুবে যায় নগরীর স্টেডিয়াম রোড, নজরুল এভিনিউসহ অধিকাংশ প্রধান প্রধান সড়ক। রেইসকোর্স, দ্বিতীয় মুরাদপুর এলাকায় বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করে গৃহবন্দি হয়ে পড়ে হাজারো পরিবার। ড্রেনের ময়লা ও দূর্গন্ধযুক্ত পানির কাছে মানুষগুলো রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায়ও কোন কাজেই আসছেনা জাইকার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য তৈরি ড্রেনেজ ব্যবস্থা।

অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে নগরীর বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট বৃষ্টির পানিতে দ্রুত তলিয়ে যাচ্ছে। নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছে নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় লাকসাম রোড, কান্দিরপাড় নজরুল এভিনিউ, বাদুরতলা, ডাক্তারপাড়া, তালপুকুর রোড, ফয়জুন্নেছা স্কুল রোড, শিক্ষাবোর্ড এলাকা, টমসম ব্রিজ এলাকা, উত্তর চর্থা, দক্ষিণ চর্থা, ঢুলিপাড়া, থিরাপুকুর পাড়, জিলা স্কুল-স্টেডিয়াম রোড, নুরপুর হাউজিং, নতুন চৌধুরীপাড়া, ডিসি রোড, মুরাদপুর, পার্ক রোড, রেসকোর্স, সিটি করপোরেশনের পিছনের সড়কসহ নগরীর বিভিন্নস্থান। ড্রেন থাকা সত্ত্বেও পানি নামছে না।

রেসকোর্স এলাকার বাসিন্দা মোঃ ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেয়র শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে দু’ বার নির্বাচিত হয়েছেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আমরা আগেও বৃষ্টি হলে যেমন পানিবন্দি থাকতাম এখন আগের চেয়ে আরো বেশি পানিবন্দি অবস্থায় আছি। যে পরিমাণ উঁচু করে ড্রেন বানাইছে এই ড্রেইন পুকুরের পাড়ের মত হইয়া গেছে। এহন আমরার বাসা বাড়ির পানিই নামতে পারে না। ভাইরে ভীষণ যন্ত্রনায় আছি।’

সুত্র জানায়, বিগত দু’বছর ধরে জাপানী উন্নয়ন সংস্থা জাইকার অর্থায়নে নগরীর শাসনগাছা, রেসকোর্স, বাগিচাগাঁও, ফায়ার সার্ভিস রোড, কান্দিরপাড় নজরুল এভিনিউ, রানীরবাজার, অশোকতলা, স্টেশন রোড, পুলিশ লাইন, জেল রোড, ধর্মসাগরের পশ্চিমপাড়, ঝাউতলা, বাদুরতলা, মনোহরপুর, সার্কিটহাউজ রোড, আদালতের মোড়, তালপুকুর রোড, ফয়জুন্নেসা স্কুল রোড, ডাক্তার পাড়া, সদর হাসপাতাল রোড, ছাতিপট্টি, রাজগঞ্জ, মোগলটুলীসহ প্রায় একশ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন বক্স ড্রেন নির্মাণ করলেও এসব ড্রেন পানি নিস্কাশনে কোন কাজে আসছেনা। অভিযোগ রয়েছে সিটি করপোরেশনের সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এসকল ড্রেনের কাজ অনেক স্থানেই অসমাপ্ত পড়ে রয়েছে।

আবার কোথাও ড্রেনের মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই ঠিকাদার ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ করে ফেলেছে। ফলে ময়লা আবর্জনা জমে পানি চলাচল ব্যহত হচ্ছে।  সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অজ্ঞাত কারণে সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করায় এখন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

এ বিষয়ে সিটি মেয়র মোঃ মনিরুল হক সাক্কুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এখনো ড্রেনের কাজ বাকি আছে। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা আর থাকবে না।’ রাইজিংবিডি/কুমিল্লা/১৫ জুলাই ২০১৯/জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল/টিপু