সারা বাংলা

সাগরে যেতে প্রস্তুত জেলেরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি : সাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। সাগরে মাছ শিকারে যেতে প্রস্তুত কক্সবাজার উপকূলের জেলেরা। তবে সাগরে জলদস্যুতা রোধ, বিদেশি ট্রলারের দৌরাত্ম বন্ধ ও ঠিক সময়ে দুর্যোগ বার্তা পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন জেলে ও ট্রলার মালিকরা। জেলেদের নিরাপত্তায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক।

মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার উপকূলের ফিশারি ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাঁকখালী নদীর মোহনায় নোঙর করা আছে শত শত মাছ ধরার ট্রলার। সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে এতদিন সাগরে মাছ শিকারে যায়নি এসব ট্রলার। অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করেছে জেলে পরিবারগুলো। সরকারি নিষেধাজ্ঞার দিন শেষ হওয়ায় ফের সাগরে জাল ফেলার অপেক্ষায় খোশ মেজাজে কক্সবাজার উপকূলের জেলেরা। এখন তারা সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। ট্রলারে খাদ্যসামগ্রী, পানি, লাকড়িসহ নানা সরঞ্জাম নেয়া হচ্ছে। দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও সাগরে জলদস্যুদের নিয়ে আতঙ্কে আছেন জেলেরা।

এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি সিরাজ উদ্দিন বলেন, সরকারিভাবে ৬৫ দিন মাছ ধরার বন্ধ থাকার কারণে নানা সমস্যায় দিন কেটেছে। সুদে টাকা নিয়ে কোনোরকমে খাবারের ব্যবস্থা করলেও ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ বহন করতে পারিনি। এখন সাগরে মাছ ধরতে যাব, টাকা পাব, তা দিয়ে পাওনা শোধ করব।

মাঝির ঘাট এলাকার ট্রলার মালিক শামশুল আলম বলেন, ট্রলারে ১৮ জন জেলেকে মাছ ধরতে পাঠাচ্ছি। প্রায় ৩ লাখ টাকার খাদ্য, তেল, জালসহ নানা সরঞ্জাম ট্রলারে দিয়েছি।

এফবি ছকিনা ট্রলারের জেলে সাইফুল বলেন, ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের পর যখন সাগরে যাচ্ছি, তখন মনে একটু ভয় লাগছে। কারণ, জলদস্যুরা আক্রমণ করতে পারে।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য জেলার ৪ হাজারের অধিক ট্রলার ও জেলে প্রস্তুত। সাগরে জেলেরা জলদস্যু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশকে জলদস্যুতা রোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া, বাংলাদেশের জলসীমায় বিদেশি ট্রলারের দৌরাত্ম বন্ধ ও ঠিক সময়ে দুর্যোগ বার্তা দেয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, সাগরে জেলেদের নিরাপত্তার জন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার সময় নিবন্ধিত ৪৮ হাজার ৩৯৩ জন জেলেকে জনপ্রতি ৮৬ কেজি চাল দেয়া হয়েছে। তবে কক্সবাজারে এখনো দেড় লাখের অধিক জেলে ও মৎস্য শ্রমিক অনিবন্ধিত রয়েছে বলে দাবি মৎস্য শ্রমিক, মৎস্য ব্যবসায়ী ও ফিশিং বোট মালিক সমিতির। রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/২৩ জুলাই ২০১৯/সুজাউদ্দিন রুবেল/রফিক