সারা বাংলা

দেউন্দি বাগানের ব্রিজগুলো ভাল নেই

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা: দেউন্দি বাগানের চা সমৃদ্ধ বিশাল এলাকায় যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে টিকিয়ে রাখা ব্রিজগুলো ভাল নেই। যে কোন সময়েই ভেঙ্গে পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে এই বাগানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় ঐতিহাসিক রঘুনন্দন পাহাড়ের অবস্থান। এ পাহাড়ের পাশেই চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নে ১৮৮৯ সালে পতিত জমি আবাদ করে ১১৩৮ হেক্টর জমিতে দেউন্দি বাগানের যাত্রা শুরু হয়।

টিলায় টিলায় রোপণ করা হয় চা গাছ। গাছ থেকে শ্রমিকরা সবুজ পাতা সংগ্রহ করেন। পাতা ফ্যাক্টরিতে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এমনভাবে শুরু থেকে বাগানটি মানসম্মত চা পাতা উৎপাদন করে আসছে। এ পাতা দেশীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

শুরুতে এ বাগানের চা পাতাগুলো বিক্রি করতে চট্রগ্রাম ওয়্যার হাউজে প্রেরণের জন্য টলি করে নিয়ে আসা হতো শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে। পরে এ প্রথা বাতিল হলে সড়ক পথে শুরু হয় চা পাতা সরবরাহ। এরপর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ থেকে সড়ক পথে গাড়ি করে সোজা দেউন্দি বাগানের ফ্যাক্টরিতে, আবার এখান থেকে চান্দপুর তেমুনিয়া হয়ে চুনারুঘাট উপজেলা শহরে ও একই স্থান থেকে লালচান্দ বাগান হয়ে শাহজিবাজার এবং মাধবপুর উপজেলা শহরে যাতায়াতের ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

কিন্তু এসব সড়কের দেউন্দি বাগান এলাকার বিভিন্ন স্থানের ব্রিজগুলো আজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোন সময় ব্রিজগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

গত সপ্তাহে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বাগানের বাজার টিলা ব্রিজে মেরামত চলছে। বাগানের পক্ষ থেকে মেরামত কাজ দেখভাল করছেন হেড টিলা বাবু এবিএম মহসিন। শ্রমিকরা বাঁশ ও বালুভর্তি বস্তা দিয়ে ব্রিজটিকে রক্ষার চেষ্টা করছেন।

এমনভাবে ফাঁড়ি বাগান গ্যালানিয়া ব্রিজটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বদরগাজী ব্রিজটির মাঝখানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। একইভাবে বাগানের ১নং ব্রিজ, ৪নং ব্রিজ, সোনাই বস্তি ব্রিজ, ৬নং ব্রিজের অবস্থাও বেহাল।

সূত্র জানায়, প্রভাবশালীরা নিজেদের স্বার্থে বালু ব্যবসা করছে। বালুভর্তি ট্রাক ব্রিজগুলো দিয়ে চলাচল করছে। তারমধ্যে বৃষ্টি হলেই ব্রিজগুলোর পাশ থেকে বালু মাটি সরে যাচ্ছে। তাই যতই দিন যাচ্ছে ব্রিজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।

জানা গেছে, বাগান থেকে চলে আসা বিভিন্ন ছড়া থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আবার ব্রিজ দিয়ে বালুভর্তি ট্রাকও চলাচল করে। এসব কারণেই ব্রিজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেকোন সময়ে ব্রিজগুলো ভেঙ্গে বাগানের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ব্রিজগুলো মেরামত ও পুনঃনির্মাণ করার জন্য চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বাগানের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এর অনুলিপিও দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের।

১১৩৮ হেক্টর পাহাড়ি জমির এ বাগানে বাসরত ৬৫০০ লোকের মধ্যে ১৪০০ শ্রমিক চা পাতা উৎপাদনে জড়িত আছে। এরমধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে এসব ব্রিজ দিয়ে পাতা বহনকারী ও বিভিন্ন প্রকারের  গাড়ি চলাচল করছে।

 

রাইজিংবিডি/ হবিগঞ্জ/২৫ জুলাই ২০১৯/মোঃ মামুন চৌধুরী/টিপু