সারা বাংলা

স্কুলে ক্লাস করতে ভয় পায় কেয়া

ঝালকাঠি সংবাদদাতা: ‘আমার স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে ভয় হয়, কখন যেন আমাদের মাথার উপরে টিনটুন ভাইঙ্গা পরে’। এই ভয় শ্রীমন্তকাঠী এম.এল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী হালিমা আক্তার কেয়া’র।

‘যহন বাতাস বা বৃষ্টি হয় তহন আমরা বই খাতা লইয়া বড় আপুগো বিল্ডিং এর ক্লাশরুমে যাইয়া বইয়া থাকতে হয়’ অভিভাবকের কাছে এমন কষ্টের কথা বলেও লাভ হয়নি কেয়া’র। তাকে স্কুলে প্রতিনিয়তই এই কষ্টের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শ্রীমন্তকাঠী এলাকার ঐতিহ্যবাহী এই বালিকা বিদ্যালয়টি ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত। কেয়া এ স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সুনামের সাথে চলে আসা স্কুলটির মূল অবকাঠামো খুবই নড়বড়ে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ঝুঁকিপূর্ণ ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টি হলেই ক্লাস রুমে বইখাতা আসবাবপত্র ভিজে যায়। পাঠদানকালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাই থাকেন আতঙ্কে। দ্রুত নতুন ভবন বা বিকল্প ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সদসবৃন্দ ও অভিভাবকগণ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মুবিনুল ইসলাম বলেন, ‘৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানে এ স্কুলে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলে দুটি ভবন থাকলেও পাকা ভবনটিতে পর্যাপ্ত রুম না থাকায় কাঠের তৈরি পুরাতন টিনসেট ভবনে ৬ষ্ঠ এবং ৯ম ও ১০ম শ্রেণির গ্রুপ ক্লাস নিতে হয়। যদিও এ ভবনটি গত মে মাসের ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতে হেলে পরেছে। বর্তমানে ভবনটি কয়েকটি খুটির মাধ্যমে ঠেক দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে একটু বাতাস হলেই শিক্ষার্থীরা ভয়ে পাশের ভবনটিতে গিয়ে অন্যদের ক্লাশ রুমে গিয়ে আশ্রয় নেয়।’

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিউটি শিকদার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি অনেক আগে কাঠ ও টিন দ্বারা নির্মিত ছিল। এটি পুরাতন হয়ে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতে হেলে পড়ে। বর্তমানে পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় বিঘ্নন হচ্ছে পাঠদান। তবে আমরা ভবনের জন্য উধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল বাশার তালুকদার বলেন, ‘এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনসেট ভবনটি হেলে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা আছে এবং পরে এটা ডিজি অফিসের তালিকায় প্রেরণ করা হয়েছে।’

 

রাইজিংবিডি/ঝালকাঠি/১ আগস্ট ২০১৯/অলোক সাহা/টিপু