সারা বাংলা

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের নাজুক অবস্থা

কক্সবাজার প্রতিনিধি : নাজুক অবস্থা কক্সবাজার-টেকনাফ শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের। গত দুই বছরে এই সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত। দীর্ঘ যানজট এলাকাবাসীর এখন নিত্যসঙ্গী। বর্ষায় মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে হাজার হাজার যানবাহন।

যাত্রী ও চালকদের অভিযোগ, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। আর এই সড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য মন্ত্রী পরিষদ সচিব নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এলাকাবাসী জানান, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা কুতুপালং, থ্যাংখালী, বালুখালী, পালংখালী, উচিংপ্রাং, লেদা ও নয়াপাড়াতে আশ্রয় নেয়ার পর কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কগুলোতে দৈন্যদশা শুরু হয়। রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক, দেশীয় এনজিও ও দাতা সংস্থার হাজার হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক যাতায়াতের কারণে সড়ক চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই মহাসড়কে যান চলাচল বেড়ে যাওয়ায় উখিয়া-টেকনাফে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। উখিয়ার চৌধুরী পাড়া, কোটবাজার ও থ্যাংখালী এলাকায় প্রায়ই পণ্যবাহী ট্রাক বড় বড় খানা খন্দে পড়ে উল্টে যায়। এতে দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হয়।

উখিয়ার কোট বাজারের সিএনজিচালক রশিদ মিয়া (৩৫) জানান, এই সড়কে গত ১০ বছর ধরে গাড়ি চালান তিনি। সড়কের বেহাল অবস্থা এবারের মতো আর কখনো হয়নি। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা আসার পর থেকেই আমাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। কত সুন্দর সড়ক এখন খানা খন্দে পরিণত হয়েছে।

উখিয়ার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহামুদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘রোহিঙ্গারা আসার পর আমরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হইনি। বিগত দিনে আমাদের এলাকায় অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন হয়েছিল সেগুলোও ধ্বংস হয়েছে। অবাধে ত্রাণের ও এনজিওদের গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে।’’ 

উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য বখতিয়ার আহমদ বলেন, রাজাপালং এখন দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম একটি ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ৫০ হাজার লোকের বাস থাকলেও এখন এখানে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে। দিনে হাজার হাজার গাড়ি চলছে এই সড়ক দিয়ে। উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত যে যানজট তৈরি হয় তা ঢাকার ব্যস্ততম ঢাকাতেও হয় না।

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের টেন্ডার কাজ শেষ হয়েছে। কাজও চলছে। কিন্তু নানা জায়গায় প্রতিবন্ধকতার কারণে কাজের ধীরগতি হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এই দুর্ভোগ থেকে উত্তরণের জন্য সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসন, ঠিকাদার এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সড়কের যেখানে গর্ত হয়েছে, সেখানে আপাতত মেরামত করে দেবার এবং দ্রুত এই সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করার।

কক্সবাজার লিংকরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত কক্সবাজার-টেকনাফ শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের দৈর্ঘ্য ৭৯ কিলোমিটার। রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/০৬ আগস্ট ২০১৯/সুজাউদ্দিন রুবেল/বকুল