সারা বাংলা

ভাগ্যলক্ষ্মীর অসহায় জীবনে জেগেছে আশা

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা : ‘অসহায় হয়ে বাঁচতে চাই না। বাঁচার মত বাচঁতে চাই। চাই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সুন্দর পথে চলতে। আমাকে সুন্দর পথ দেখিয়েছে হবিগঞ্জ জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। এতে করে আমার জীবনে আশা জেগেছে।’

শহরের স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় স্যানেটারী টাওয়েল তৈরীকালে প্রতিবেদকের কাছে ভাগ্যলক্ষ্মী এসব কথা বলেন।

ভাগ্যলক্ষ্মীর গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর এলাকায়। বর্তমানে তারা শহরের মাছুলিয়া এলাকায় বসবাস করছে। স্বামীর বাড়ি ছিল সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার প্রতাবপুর।

আলাপকালে ভাগ্যলক্ষ্মী জানান, এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। জীবনের চাকা সচল রাখার জন্য তিনি একটি চাকরি খুঁজে বেড়াতেন। অবশেষে চাকরি না পেয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন কোন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ নেওয়ার।

তিনি এ উদ্দেশ্যে যান হবিগঞ্জ জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলমের সহযোগীতায় ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্লক-বাটিক ও মোমবাতি তৈরীর উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি স্বামী বিকাশ চন্দ্র দাশ তিন সন্তান রেখে মারা যান। এরপর থেকে সন্তানদের নিয়ে তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বিষয়টি জেনে ভাগ্যলক্ষ্মীকে কর্মসংস্থান তৈরী করে দিতে চেষ্টা করেন। পরে তাকে কিশোরী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতা সৃষ্টিতে স্যানেটারী টাওয়েল প্রস্তুতকরণ ও বিতরণ কর্মসূচি প্রকল্পে কাজ দেন। এখন মনের আনন্দে সে কাজ করছে।

এ কাজের মাধ্যমে ভাগ্যলক্ষ্মী নিজের ভাগ্য বদলাতে চায়। প্রকল্প শেষ হলে নিজেই কারখানা দিয়ে স্যানেটারী টাওয়েল তৈরী করে বাজারজাত করার ইচ্ছা ভাগ্যলক্ষ্মীর।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘যেসব নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। আমরা তাদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করছি। তারা এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বাড়ি বাড়ি কর্মসংস্থান গড়ে তুলছে। ভাগ্যলক্ষ্মীও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আমার বিশ্বাস সে পারবে।’ রাইজিংবিডি/ হবিগঞ্জ/২১ আগস্ট ২০১৯/মো. মামুন চৌধুরী/জেনিস