সারা বাংলা

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, সরগরম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র

কক্সবাজার প্রতিনিধি : ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় কমেছে দামও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সুফল পেতে শুরু করেছেন তারা। আর মাছের সরবরাহ বেশি হওয়ায় বেড়েছে রাজস্ব আদায়ও।

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের দেয়া তথ্য মতে, গত একমাসে সামুদ্রিক মাছ অবতরণ হয়েছে ৯’শ ৮৫ মেট্রিক টন। যার মধ্যে ইলিশ রয়েছে প্রায় ৩’শ মেট্রিক টন। আর রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫ লাখ টাকার বেশি।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেটিঘাট। যেখানে ভিড়ছে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা। আর এসব নৌকায় রয়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ইলিশের পাশাপাশি রয়েছে অন্যান্য সামুদ্রিক মাছও। যা ঝুড়ি ভর্তি করে শ্রমিকরা নিয়ে যাচ্ছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পল্টনে। দেশের নানাপ্রান্ত থেকে আসা মৎস্য ব্যবসায়ীদের মাছ বেচা-কেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র।

অবতরণ কেন্দ্রের পল্টনে শুধু ইলিশ নয়; ইলিশের পাশাপাশি রিটা, পোয়া, টুনা, সুরমা, রুপচাঁদা ও লাইট্ট্যা মাছে সয়লাব। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার ঘোষিত ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের কারণে যেমন মাছ সাইজ বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে মাছের উৎপাদন।

   

মৎস্য ব্যবসায়ী ছুরত আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, আগে সাগরে রিটা, পোয়া, টুনা, সুরমা, রুপচাঁদা মাছ কম পাওয়া যেত। আর যা পাওয়া যেত তাও আকারে ছোট। কিন্তু এখন এসব সামুদ্রিক মাছ সাগরে প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে এবং আকারেও অনেক বড়।

আরেক ব্যবসায়ী রশিদ আহমদ রাইজিংবিডিকে বলেন, সরকার ঘোষিত ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার কারণে এখন আমরা সুফল পাচ্ছি। সাগরে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে গেলে আগে অনেক কম মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু সাগরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে এবং বড় বড় সামুদ্রিক মাছও পাওয়া যাচ্ছে।

সিরাজ নামের আরেক ব্যবসায়ী রাইজিংবিডিকে বলেন, ইলিশ মাছ কেজি ৪শ থেকে ৫ শ টাকা, টুনা মাছ ১৮০ টাকা, সুরমা মাছ ৪০০ টাকা, রিটা মাছ ৩০০ টাকা, ছুরি মাছ ২০০ টাকা ও লইট্ট্যা মাছ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সামুদ্রিক মাছে সয়লাব হওয়ায় বেড়েছে মৎস্য শ্রমিকদের ব্যস্ততা। ফলে মাছ উঠা-নামায় ব্যস্ত সময় পার করতে পারায় দারুণ খুশি তারা।

   

মৎস্য শ্রমিক রিয়াদ রাইজিংবিডিকে বলেন, এখন কথা বলার সময় নেই। এখন মাছ উঠা-নামার কাজে ব্যস্ত। যতই ব্যস্ত থাকবো ততই টাকা পাব এবং সংসারটা সুখে থাকবে।

আরেক মৎস্য শ্রমিক কেরামত উল্লাহ রাইজিংবিডিকে বলেন, এখানে ৩শ’ থেকে ৪শ’ মৎস্য শ্রমিক রয়েছে। এখন সবাই ব্যস্ত। কারণ সামুদ্রিক মাছ নিয়ে ট্রলারগুলো সাগর থেকে ফিরছে। ফলে ট্রলার থেকে মাছগুলো পল্টনে নিয়ে আসার কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।

আর কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. শরীফুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে জানান, সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের সুফল পেতে যাচ্ছে জেলে, ট্রলার মালিক, মৎস্য ব্যবসায়ী ও মৎস্য শ্রমিকরা। সাগরে যেমন মাছের উৎপাদন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে মাছের আকারও। ফলে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের অবতরণ যেমন বেড়েছে তেমনি সরকারি রাজস্ব আদায়ের হার বেড়েছে। রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/২ সেপ্টেম্বর ২০১৯/সুজাউদ্দিন রুবেল/বুলাকী