সারা বাংলা

সুগন্ধার আকস্মিক ভাঙনে ফেরি চলাচল বন্ধ

ঝালকাঠির নলছিটিতে সুগন্ধা নদী তীরবর্তী বন্দরের অপর প্রান্তে ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাট এলাকায় আকস্মিক নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ফেরির গ্যাংওয়ে। এতে নলছিটির সঙ্গে ঝালকাঠির গাড়ি চলাচল তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা রাইজিংবিডিকে জানায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিকট শব্দে ফেরির গ্যাংওয়ে ভেঙে পড়ে নদীতে। মুহূর্তের মধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে যায় ফেরিঘাটের চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ট্রলার শ্রমিকদের একটি অফিস কক্ষ। এলাকার লোকজন এসে নদী থেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কিছু মালামাল উদ্ধার করতে পারলেও বেশিরভাগ নদীতে তলিয়ে গেছে। এতে ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে নদী ভাঙনের শিকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, দুই বছর ধরে সুগন্ধা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে উপজেলার ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাট, বহরমপুর ও কাঠিপাড়া গ্রাম। এ বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও নদী ভাঙন রোধে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সবশেষ আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফেরির গ্যাংওয়ে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

ষাইটপাকিয়া ফেরীঘাট এলাকার চা দোকানি ইউসুফ আলী হাওলাদার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সকালে দোকান খোলার পর হঠাৎ একটি শব্দ হয়। পলকের মধ্যে সব নদীতে চলে যায়। দোকানের কোন মালামাল রক্ষা করা যায়নি।’

ফেরীঘাট এলাকার মুদি ব্যবসায়ী কাছেম হোসেন জানান, ‘মুহূর্তের মধ্যে সব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত দুই বছর ধরেই অল্প অল্প করে ভাঙছিলো নদী। সোমবার আকস্মিক ভাবে সব শেষ হয়ে গেলো। সব হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম।’

ষাইটপাকিয়া ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা স্বপন দাস ও জলিল শরীফ জানান, প্রতিদিনের মত আমরা ঘাটে শ্রমিকদের অফিস কক্ষে বসে ছিলাম। একটা বিকট শব্দে সব ভেঙে পড়ে নদীতে। এতে ফেরির গ্যাংওয়ে, ট্রলারঘাট ও আমাদের অফিস কক্ষটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। পরে উপজেলার সাথে যোগাযোগ সচল রাখতে দ্রুত পূর্বের ঘাটের পাশেই বহরমপুর গ্রামে একটি বিকল্প জায়গায় ঘাট স্থাপন করা হয়। এতে মানুষের ভোগান্তি কিছুটা লাঘব হয়।’

এ ব্যাপারে নলছিটি-ষাইটপাকিয়া ফেরির সুপারভাইজার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আকস্মিক ভাঙনে ফেরির গ্যাংওয়ে ভেঙে যাওয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য নলছিটি-ষাইটপাকিয়া রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বরিশাল, ঝালকাঠিসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সাথে নলছিটি উপজেলার যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভাঙনের পরই আমরা জেলা ফেরি বিভাগের মাধ্যমে ক্রেন খবর দিয়েছি। আগামীকালের মধ্যে নতুন করে গ্যাংওয়ে স্থাপন করার পর ফেরি চলাচল করতে পারবে বলে আশা করি।’ 

এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুম্পা সিকদার বলেন, ‘সুগন্ধা নদীর আকস্মিক ভাঙনে ষাইটপাকিয়ার কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফেরির গ্যাংওয়ে বিলীন হওয়ায় পর এ রুটে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে কাজ শুরু হয়েছে। বিষয়টি সড়ক ও জনপদের ফেরি বিভাগে জানানো হয়েছে। দ্রুত ক্রেন পাঠিয়ে নতুন গ্যাংওয়ে তৈরির কাজ শুরু করা হচ্ছে।’ ঝালকাঠি/অলোক সাহা/জেনিস