শেষ পর্যন্ত শিশুটি বিক্রি করতে ব্যর্থ হলো শিখা-নিখিল দম্পতি।
সন্তান বিক্রির জন্য ক্রেতার সঙ্গে স্টাম্পে চুক্তির শেষ মুহূর্তে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে শিশুটিকে মায়ের কোলে তুলে দিলেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন।
আজ রোববার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে।
হেপাটাটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত শিখার চিকিৎসার খরচ জোগাতে স্বামী নিখিল তাদের দেড় মাস বয়সী শিশু সন্তান বিক্রির উদ্যোগ নেন। নিঃসন্তান এক দম্পতি ২৫ হাজার টাকায় শিশুটি ক্রয় করতে চেয়েছিলেন।
পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে এই অতৎপতা রোধ করে অসুস্থ শিখা রাণীর চিকিৎসার ভার বহন করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন ডা. বাকির হোসেন। তার মহতি উদ্যোগে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শিখা-নিখিল দম্পতি।
হাসপাতালে দায়িত্বরত বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মো. নাজমুল হুদা জানান, উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের বাসিন্দা নিখিল। তিনি দিনমজুর। তাদের সংসারে এর আগে দুটি সন্তান রয়েছে।
দেড় মাস পূর্বে সাতলার একটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনে আরেকটি সন্তান প্রসব করেন শিখা রাণী। সেখানে অপারেশনে ত্রুটি হয়েছে- এমন অভিযোগ নিয়ে কয়েক দিন পূর্বে শিখা রাণীকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট গাইনী বিভাগের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, শিখা হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত। তার জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।
কিন্তু দিনমজুর নিখিল তার স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ জোগাতে পারছিলেন না। তাই তাদের ছোট সন্তান বিক্রি করার উদ্যোগ নেন। এরই মধ্যে বরিশাল নগরীর নথুলাবাদ এলাকার নিঃসন্তান এক দম্পতি সন্তানটি ক্রয় করতে চান।
উভয়পক্ষের সম্মতিতে আজ রোববার হাসপাতালে বসে দেড়শত টাকার স্টাম্পে চুক্তি করে ২৫ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এরই মধ্যে বিষয়টি টের পেয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন কোতয়ালি মডেল থানার এসআই মো. নাজমুল হুদাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থানে উপস্থিত হয়ে অপতৎপতা রোধ করেন। সুযোগ বুঝে সটকে পড়েন ওই নিঃসন্তান দম্পতি।
শিখা ও নিখিল নিজেদের ভুল স্বীকার করে সন্তানকে কোলে জড়িয়ে ধরে ডা. মো. বাকির হোসেনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে বাকির হোসেন জানান, বাচ্চাটিকে বাবা-মায়ের কোলে তুলে দিয়ে শিখার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। বরিশাল/জে. খান স্বপন/বকুল