সারা বাংলা

স্বেচ্ছাশ্রমে ৬০০ ফুট দীর্ঘ সাঁকো নির্মাণ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার দক্ষিণ চর ফলকন গ্রামের লামাচরে তিন হাজার মানুষের বসবাস। জারিরদোনা খাল পাড়ের রাস্তাটি ছিল তাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। 

গত কয়েক বছর আগে খালের তীব্র স্রোতে সড়কটি ভেঙে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় বাসিন্দাদের।  বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কিন্তু কেউ যথাযথ উদ্যোগ নেয়নি।  অবশেষে এলাকার যুবকরা স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছে।  স্বেচ্ছাশ্রম আর স্থানীয়দের অর্থায়নে ৬০০ ফুট দীর্ঘ কাঠের সাঁকো নির্মিত হয়েছে।  যে কোরণে সাঁকোটির নাম দিয়েছেন ‘স্বপ্নের সেতু’। এদিকে লামাচরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘স্বপ্নপুরি’।  কথাগুলো রাইজিংবিডিকে বলেছেন কমলনগর স্টার ক্লাবের সহ-সভাপতি ও সেতু নির্মাণ উদ্যোক্তা মাকছুদুর রহমান। 

স্থানীয়রা বলেন, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় জারিরদোনা খাল ভেঙে চলাচলের রাস্তা (বেড়িবাঁধ) বিলীন হয়ে যায়। এতে ছয় বছর ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এ ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ পেতে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উপায় না পেয়ে নিজেরাই চলাচলের জন্য সাঁকোটি নির্মাণ করেন। পাটারিরহাট উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় সেখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়।  বাঁধের ওপর দিয়ে পাটারিরহাট-খায়েরহাটে যাতায়াত করে স্থানীয়রা। খালপাড়ের ওই বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ে এলাকাবাসী।

জানা গেছে, স্থানীয় শতাধিক যুবকের উদ্যোগে গ্রামবাসীর দেয়ার বাঁশ-কাঠ ও টাকায় ২৭ দিনে এটি নির্মাণ হয়।  নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা। 

গত ৬ নভেম্বর বিকেলে ‘স্বপ্নের সেতু’ নামের সাঁকোর উদ্বোধন করা হয়। যারা স্বেচ্ছাশ্রমে এটি নির্মাণ করেছেন, তারাই স্থানীয়দের নিয়ে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন।

ইসমাইল, রাজুসহ কয়েকজন উদ্যোক্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, জারিরদোনা খাল ভেঙে চলাচলের রাস্তা বিলীন হয়ে যায়।  যে কারণে গত  ৬  বছর ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুঃখ-কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাটলেও নজরে আসেনি কারও।  উপায় না পেয়ে নিজেরাই নিজদের চলাচলের জন্য সাঁকো নির্মাণ করেন।  পাটারিরহাট উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় সেখানে সড়কটি নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় কমলনগর স্টার ক্লাব, নিউ তারুণ‌্য তরঙ্গ সংসদ, স্টুডেন্ট সংসদ ও জুনিয়র একতা সংঘ নামের এই চারটি সংগঠন সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।  পরে তারা ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন থেকে টাকা ও কাঠ-বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকোটি নির্মাণ করে। লক্ষ্মীপুর/ফরহাদ/সাইফ