সারা বাংলা

টাঙ্গাইলে ১৪৪ ধারা, পরিস্থিতি থমথমে

টাঙ্গাইল শহরে ১৪৪ ধারা জারির কারণে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বুধবার রাতে জারি করা এ ১৪৪ ধারা বলবৎ হয়েছে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। 

এর আগে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বুধবার রাত ৮টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল্লাহর আদেশে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এজন্য মাইকিংও করা হয়।

টাঙ্গাইল জেলা সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা কাজী গোলাম আহাদ রাইজিংবিডিকে জানান, আগামী ২২ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার বড় ভাই আমিনুর রহমান খান বাপ্পীর মৃত্যুবার্ষিকী পালনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো টাঙ্গাইল।

এরপর পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন তাদের বিরোধী পক্ষ। এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে পরিস্থিতির অবনতির ঘটার আশঙ্কায় শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান, শহীদ মিনার, নিরালার মোড়, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও প্রধান প্রধান সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং এর আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

এদিকে, ১৪৪ ধারার কারণে আমিনুর রহমান খান বাপ্পীর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শোকর‌্যালি করতে পারেনি আয়োজকরা।

বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ পাড়ায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার বাসার সামনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হন। এরপর তারা র‌্যালি বের করতে চাইলে পুলিশ ১৪৪ ধারার বিষয়টি অবহিত করে।

তখন সবাই স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে বাপ্পী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।  

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ২১ নভেম্বর সন্ত্রাসী হামলায় নিজ বাড়ির কাছেই খুন হন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আমিনুর রহমান খান বাপ্পী।

তিনি ঘাটাইল-৩ আসনের সাবেক এমপি আানুর রহমান খান রানা ও টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তির বড় ভাই ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের বর্তমান এমপি আতাউর রহমান খানের বড় ছেলে। বাপ্পী হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এবার ‘শহীদ আমিনুর রহমান খান বাপ্পী স্মৃতি সংসদের’ ব্যানারে খান পরিবার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়। এসবের মধ্যে রয়েছে কবর জিয়ারত, বাপ্পী স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শোকর‌্যালি এবং শুক্রবার বিকেলে শহীদ মিনারে আলোচনা সভা।

কিন্তু খান পরিবারের বিরোধী আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, বাপ্পীর মৃত্যুবার্ষিকীর এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ওই পরিবার তাদের অনুসারী সন্ত্রাসীদের আবার একত্রিত করছে। এরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে টাঙ্গাইলকে আবার অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছে। তাদের এই কর্মকাণ্ড রুখতেই পাল্টা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।

তাদের কর্মসূচির মধ্যে ছিল বৃহস্পতিবার সকালে ‘নির্যাতিত আওয়ামী পরিবার’ এর ব্যানারে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও শহীদ মিনারে সমাবেশ।

পরদিন শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহীদ মিনারে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, অটোটেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সমাবেশ। এছাড়া শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।

দুপক্ষই কর্মসূচি সফল করতে শহর ও আশেপাশের এলাকায় নানা তৎপরতা চালায়।

অপরদিকে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের এমপি তানভীর হাসান ছোট মনি, তার ভাই শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনি, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, প্যানেল মেয়র সাইফুজ্জামান সোহেল খান পরিবারবিরোধী মিছিল-সমাবেশের উদ্যোগ নেয়। ফলে শহরে চাপা উত্তেজনা দেখা দেয়। টাঙ্গাইল/সিফাত/বুলাকী